থিম পুজোর নেপথ্যে : পিনাকী চৌধুরী
করোনা আবহে এইবারের দুর্গোৎসব কেমন হবে, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত ! যদিও হাতে এখনও অনেকটা সময় বাকি ! তবে বাঙালির প্রাণের উৎসব এই দুর্গোৎসব নিয়ে আজও হয়তো নেটিজেনদের মধ্যে চর্চা চলছে ! বিশেষ করে কলকাতার তথাকথিত সেই থিম পুজো নিয়ে আজও যেন উন্মাদনার অন্য নেই ! ইদানিং অনেকেই সাবেকি পুজোর সঙ্গে থিম পুজোর তুল্যমূল্য বিচার করেন ! অনেকে আবার সাবেকি পুজোতে দেবী দুর্গার সেই চিরাচরিত সুন্দর রূপের মধ্যে একটি শুদ্ধ ভক্তিভাব খুঁজে পান , কেউবা আবার থিম পুজোকে অগ্রাধিকার দেন ! তবে উত্তর কলকাতার বেশিরভাগ পুজোতেই কিন্তু মা দুর্গার সেই চিরাচরিত ট্র্যাডিশনাল সাবেকি রূপ দেখতে পাওয়া যায় ! কিন্ত থিম পুজোর প্রচলন হয়েছিল কিভাবে ?
১৯৮৫ সালে " শুদ্ধ শুচি- সুস্থ রুচি" এই স্লোগান যেন কাঁপিয়ে দিয়েছিল তামাম কলকাতাবাসীকে ! ছোট্ট অথচ গভীর অর্থবহ সেই স্লোগানে যেন নিহিত ছিল এক অনন্য বার্তা ! বস্তুতঃ তারপর থেকেই যেন কলকাতার পুজোর ঘরানাটাই যেন পরিবর্তিত হয়ে যায় ! পাড়ায় পাড়ায় শুরু হয়ে যায় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই !, হ্যাঁ , সেই স্লোগানটির নেপথ্যে ছিল একটি বেসরকারি রঙপ্রস্তুতকারক সংস্থা ! থিম শিল্পীদের নিপুণ হাতের স্পর্শে থিম পুজোয় যেন প্রাণ প্রতিষ্ঠা হল ! কোথাও ভাঁড়ের মন্ডপ, আবার কোথাও বা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে নিত্যনতুন মন্ডপ তৈরি হল ! মন্ডপসজ্জার সাথে সাথে অভিনবত্ব এল দেবী প্রতিমাতেও ! শিল্পীর নিপুণ হাতের স্পর্শে সুন্দর দেবী প্রতিমা নির্মিত হল ! আর মন্ডপসজ্জা, দেবী প্রতিমা এবং আলোকসজ্জার জন্য সেই বেসরকারি রং প্রস্তুতকারক সংস্থা শারদসম্মান দিতে আরম্ভ করলো, সেই সঙ্গে আর্থিক পুরষ্কার ! রচিত হল একটি যুগান্তকারী অধ্যায় !
কলকাতার দুর্গাপুজো যেন আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠলো বিশ্বজনীন ! সময় থেমে থাকেনি, তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল ! ১৯৯৫ সাল থেকেই কলকাতার বেশিরভাগ পুজোই হয়ে উঠলো থিম পুজো ! বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, থিম পুজোর দৌলতে কিন্তু কলকাতার শারোদৎসব যেন বৈচিত্র্যে, বিন্যাসে এবং অভিনবত্বে আজও সেরার সেরা ! শিল্পীর কল্পনা, ভাবনায় যেন আজও উৎকর্ষতা ধরা পড়ে !
1 Comments:
ভালো বলেছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন