![]() |
কিশলয় গুপ্ত'এর এক গুচ্ছ কবিতা |
বাউলানা-৫.
পুড়ে যাওয়া বুকের ছাই দিয়ে দাঁত মেজে ফেলি
কিছু তো পরিস্কার থাকুক।
কুমারী বুক অনন্ত অপেক্ষায় থাকে
পুরুষালী দাঁতের সম্মান করতে শেখ হতভাগা।
এই চামড়ায় অজস্র বাক্য, শব্দ, অক্ষরের উল্কি
গাছ হয়ে জন্মাবার কথা ছিল।
জাতিস্মর বিশ্বাসে প্রেমকে বলি তফাৎ যা
ছোট মুখে বড় কথা হল কি?
চিতা থেকেও অনেক ছাই পাওয়া যায় দেখেছি
তখন দাঁতের মর্ম কে বোঝে!
দু'চোখের স্রোতে হাত ডুবিয়ে রাখি বেশ
কিছু তো পরিস্কার থাকুক।
৬.
ভালো'র দাবি কে রাখে-
কে চায় সম্মানের নামাবলী
এই গানঢালা দিব্য দিন
কতক আগন্তুক পাখি কাঁদে
কাঁদার জন্য একটা গোটা জন্ম।
কত দাম দেবে ফড়েরাজ
দাঁড়ি পাল্লার খাদে চূড়ান্ত আঁধার
মেনে নিয়ে ঝরছে হিম।
এই চামড়ায় সেলাই'এর দাগ
ছুরি, কাঁচির সমবেত গানে
হরিনাম পিতৃপরিচয় খুঁজুন
হাড়ের ভিতরে নির্মোহ ডাক...
৭.
তিন মুঠো সময়ের ভিতর
এক চিমটে মহাভারত মিশিয়ে
মাঝখানে রাজমিস্ত্রি বানিয়ে দিল
কয়েকটি সুগম সিঁড়ি।
চাঁদ প্রত্যাশী হাবাগোবার দল
মনে রাখবেন 'ইহারে জীবন কয়'
রুপকথা ছাই হয়ে গেলে
তেপান্তরের একটু দূরে হেলায়
পড়ে থাকবে ঠাকুমার ঝুলি
পড়ে থাকবে অক্ষরের অভিমান।
ধারাপাত পড়তে পড়তে একদিন
সব সকাল গুলো রাত হয়ে যায়।
কবে আর বুঝবি রে সাঁই
লালনের বুকে যত প্রেম আছে
তাকেই নব পল্লবের রুপ মেনে
জীবন শিখেছে নতজানু।
৮.
সীমারেখা মেনে নিলে কাঁটাতারে
গন্ডি ছোট হয়ে আসে।
আকাশে চোখ রাখলে সময়ে
শোনা যায় সুখী পাখসাট।
খাঁচার গল্প এবারের হড়পা বানে
ভাসিয়ে নিয়েছে রাস্তায়।
আয়েশের সবুজ বাতি জ্বলে থাকে
দুই পায়ের নিয়ন্ত্রণ রেখায়।
পতঙ্গ আগুনের মহিমা জানে
তবু জ্ঞানী বুদ্ধ ঘুমায়।
ঘুমের ভিতর স্বপ্ন নাচলে কার
মানচিত্র বদলে যায় নিমেষে।
বেড়া ভেঙে পড়শীও হাত বাড়াক
ব্যক্তিগত বুকের দিকে।
৯.
দু'পায়ের প্রতি ভরসা আছে
তাত্ত্বিক ধূলো প্রেমকে তফাৎ রেখে
আঙুলে জন্মান্তর জড়িয়ে রাখি।
সুখী ঈগলের চোখ কার্নিশে
আরও একটা ইঁটপাতা অধ্যায় গড়ে
কত গিঁটে কত পাঁচালী লুকিয়ে আছে
মুখোশের কারখানায়।
একটা সকালের গ্রীন টি কতজন
মানুষের রক্তে উল্লাস রাখে
লেখা থাকে না রেশন কার্ডে।
শব্দের থানে মৌলবাদ জীবিত
হাসমুখ লোহিত কণিকা বিজ্ঞান জানে
প্রেমে কোন মানচিত্র নেই।
দু'পায়ের প্রতি ভরসা আছে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন