![]() |
বাংলা আঞ্চলিক উপভাষা : সুকান্ত পাল |
“জিতপুরের কথ্য ভাষা”
“জিতপুরের উপভাষা ”
জিতপুরঃ মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল মহকুমার অধীন ডোমকল ব্লকের ১৩নং গরীবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬, ৭, ৮, ৯ —এই সংসদ নিয়ে জিতপুর গ্রামটি গড়ে উঠেছে।
জিতপুরের পশ্চিমে ভৈরব নদী, পূর্বে খড়ি নদী (স্থানীয়ভাবে বড়ঘাট নামে পরিচিত) সংকীর্ণরূপে বয়ে চলেছে। জিতপুর গ্রামটি অনেকগুলি পাড়ায় বিভক্ত । যেমন পূর্বপাড়া, মধ্যপাড়া ,বাগপাড়া , মাঠপাড়া, চোয়াপাড়া, জামতলা, কদমতলা, শিবতলা, হালদারপাড়া, নতুনপাড়া।
জিতপুর গ্রাম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম অর্থাৎ ১০০শতাংশ মানুষই স্বাক্ষর। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ শঙ্খশিল্পের সঙ্গে যুক্ত । তবে বর্তমানে এই শিল্প মৃতপ্রায় ।
বাংলা ভাষার উপভাষা রয়েছে পাঁচটি। যথা —ক। রাঢ়ী খ। বঙ্গালী গ। বরেন্দ্রী ঘ। কামরূপী ঙ। ঝাড়খন্ডী।
কথ্য ভাষার সাথে লেখ্য ভাষার বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। প্রথমে আমরা জিতপুরের কথ্য ভাষার ধ্বনি তাত্বিক বৈশিষ্টগুলি নিয়ে সংখেপে আলোচনা করব।
ধ্বনিতাত্বিক বৈশিষ্ট্যঃ
(১) জিতপুরের কথ্যভাষায় শব্দের আদিতে থাকা “আ” কখনও কখনও “অ্যা” রূপে উচ্চারিত হয়।
ঝাঁটা>ঝ্যাটা।
গাঁদাফুল >গ্যান্ধাফুল।
(২)এই উপভাষায় কখনো কখনো ‘অ’-কার ‘ও’রূপে উচ্চারিত হয়।
অর্জুন>ওর্জুন
মত>মতো
অর্পিতা>ওর্পিতা।
(৩) এই উপভাষায় পদান্ত ’এ’-কার ‘ ‘ই’কার রূপে উচ্চারিত হয়।
খেয়ে>খেয়ি
দেখ>দেখি।
(৪) পদের আদিতে থাকা নাসিক্যধ্বনি অনেকাংশে লুপ্ত হয়ে গেছে।
কাঁটা> কাটা
(৪)এই কথ্য ভাষায় কখনো কখনো ‘ন’ ‘ল’রূপে উচ্চারিত হয়।
জানালা>জাল্লা
(৫)আদিতে থাকা ‘স’ ধ্বনি অনেকসময় ‘চ’রূপে উচ্চারিত হয়।
স্নান >চান
(৬)সমীভবণ ও ঘটে এ ভাষাতে।
খেলনা>খেল্লা
জানালা>জাল্লা
(৭)শব্দ মধ্যস্থ ‘অ’ ‘উ’ বা ‘ও’ তে পরিনত হয়।
বোতল>বোতুল
মাধব>মাধোব
(৮)অল্পপ্রাণ মহাপ্রাণ রূপে উচ্চারিত হয়।
ছাত>ছাদ
(পরের সংখায় রূপতাত্বিক বৈশিষ্ট্য আলোচিত হবে। )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন