নরক-নাগরিক : ঋদেনদিক মিত্রো


 নরক-নাগরিক 


 ঋদেনদিক মিত্রো  

 
 

 
 নরক-নাগরিক 
 রুখে দাঁড়ালেও  মরবে,  
চুপ থাকলেও মরবে,  
কোনটা শ্রেষ্ঠ ভেবে দোখো তুমি,  
চুপ থাকা,  --- নাকি লড়বে?  

চুপ থেকে যদি সমাধান হয়,  
সমস্যা কেন বাড়ছে?  
মানুষ মানুষকেই প্রতিদিন  
বলো, কেন শুধু মারছে?   

ভাবছো তো তুমি --এই ঢের ভালো,  
প্রতিবাদে কী বা লাভ,  
আসলে অকালে মরে যেতে থাকা  
তোমাদের ওই স্বভাব !  

অকালে যারাই মরতে চাইবে,  
তারা যদি মরে মরুক ,  
তাদের বাঁচার অধিকার চেয়ে  
কেন বা ফাটাবো বুক ?   

মহাপুরুষের বাণী গুলো,  আর  --
ধর্মগ্রন্থ কপচে,  
সকলেই দেখি সকলের সাথে  
অস্ত্র নিয়েই লড়ছে !  

যে-ধর্মগ্রন্থই পড়ো --- 
বোধের ধর্ম ছাড়া --- 
সব ধর্মই অধর্ম হয় ---  
মন হয় বেয়াড়া !

আসলে,  আসল ধর্ম সেটাই -- 
চিন্তা-শক্তি বাড়ানো,  
বিচার বুদ্ধি ও সাহস নিয়ে  
ভুল দেখে রুখে দাঁড়ানো !  

সেইটা ছাড়াই আর সব দিকে  
ওস্তাদি মেরে যাই,  
আসলে আমরা কৌশল করে  
সব কিছু ভালো চাই !  

কৌশল করে ভালো কিছু পেলে ---   
শ্রম ও সততা মিথ্যা,  
প্রয়োজন হতো না তো কোনোদিন  
জ্ঞান চর্চায় নিষ্ঠা ! 

অদ্ভুত লাগে,  নীরব থেকেই  
চুপচাপ সব মরছে,  
তবু প্রতিবাদ করতে বললে  
মনে আতঙ্ক ধরছে !   

নীরব থেকেই  মরতে গিয়ে তো  
পাচ্ছ না যদি ভয়,  
প্রতিবাদ করে যদি মারা যাও -- 
কেন আতঙ্ক হয়?    

এটাই তো বিস্ময় ! 
এটাই তো বিস্ময় ! 

প্রতিবাদ করে রুখে দাঁড়ালে,  
মরতে যেমন পারো,  
জয় যদি পাও ওই যুদ্ধতে   
বাঁচতে তেমন পারো !  

কিন্তু যখন চুপচাপ থাকো,   
মরতে হবেই হবে,  
প্রতিবাদহীন মানুষ তো ভাই  
চিরকাল হারবে !  

নিজেই তো তুমি বাঁচতে শেখোনি  
বাঁচার মতন করে,   
উত্তরসুরিদেরকে বাঁচাবে  
কোন যুক্তিটা ধরে? 

তুমি নাকি খুব মঙ্গল চাও  
তোমার বংশধরে ! 
সেটা কি তাদের বিপদেতে ফেলে   
নতুন-নতুন ক'রে?   

নিজেরই বংশধরের কাছেই  
তুমি বড় বদমাস ,  
কারণ,  তুমিই রেখে তো যাচ্ছ 
তাদের জন্য ত্রাস ! 

এই মুখ নিয়ে তুমি হয়ে ওঠো  
সৎ নাগরিক,  স্বচ্ছ,   
চাটুকারিতার  পথেই যখন  
তোমার জীবিকা করছো !  

তোমার মতন চাটুকারি হতে  
বংশধরকে বলছো,   
এই ভাবে সারা পরিবারটাকে 
নিজ-হাতে শেষ করছো ! 

কতকি কায়দা দিচ্ছ শিখিয়ে  
বাস্তববাদী হতে,  
বাস্তববাদী মানে --- মাথাটাকে 
বিকিয়েই বাঁচতে ! 

তুমিই তোমার বাড়ির সবচে'  
বৃহৎ শত্রুপক্ষ,  
তোমার বাড়ির বোকা মাথা গুলো  
করছে না সেটা লক্ষ্য ! 

বলো তো বন্ধু,  তুমি কি সত্যি --  
নির্বোধ -- বুদ্ধিতে? 
তাহলে তুমিই কেন নত হও  
মহতের কীর্তিতে? 

পৃথিবীতে আজোবধি যত যা-যা 
বিপ্লব হোলো জানি ---  
চেতনাবিহীন জনগণ সব 
করেছিল হানাহানি !   

আসলে,  চেতনা সবারই তো ছিলো,  
প্রয়োগ করেনি তারা,  
সেই জন্যই সব বিপ্লব  
হয়ে গেছে  খাপছাড়া !

বিপ্লব মানে কোনো ব্যক্তির   
হয়ে তো মিছিল নয়,  
বিপ্লব মানে নিজের ভিতরে  
উপলব্ধির জয় !   

বুদ্ধি-বিকাশ নাই হলে --- আসে   
পরিবর্তনে ত্রুটি,  
পথ ভুল হলে সব নিষ্ফল,  
যত  করো ছোটাছুটি !

বিপ্লব মানে বিরাট জিনিস,  
সুখ ও শান্তি সবার,  
পশু, পাখি, কীট, জগৎ প্রকৃতি,   
সকলের অধিকার ! 

বিপ্লব মানে নিজের আলো-কে  
বের করে পথ দেখা,  
বিপ্লব মানে নিজেকে তৈরী  
চুপিচুপি একা-একা !  

নিজেকে তৈরী না-করতে চেয়ে ---
সব মতবাদ ভ্রম  -- 
ওতে আসবেনা কোনো সমাধান,  
বরং পন্ড শ্রম !    

শান্তি যদি গো ওতেই আসতো  
তবে কেন দুর্দশা --- 
দিন-দিন শুধু বেড়েই চলেছে  ---  
কান ধরে ওঠা বসা ! 

বংশধরের সঙ্গে তোমার
চলছে  গভীর  নাটক,   
তাদের ভালোটা চাইবার ছলে  
তুমিই তাদের ঘাতক !  

তাই তো তুমিই  করেই চলেছো  
কাপুরুষতার চর্চা,  
নরক সাজালে নিজের জীবন,  
দিতেই তো হয় বাহবা ! 

এখন তোমার পরিচয়টা  কী --- 
বলতে পারো কি ঠিক,  
আর কিছু নয় --- পরিচয়ে তুমি  
নরকের নাগরিক ! 

নরকে যারাই থাকতে চাইবে --- 
স্বর্গ তাদের কী হবে,  
তাই তো তারাই নরকেই সুখি  
নারকীয় গৌরবে ! 

বন্ধু,  এখনো হুঁশ কি হয় না?   
পারো না কি বদলাতে,  
সকল রকম অস্ত্র তোমার  
ধরাই তো আছে হাতে ! 

সেসব  অস্ত্র দিয়ে নিজেদের  
সঙ্গে নিজেরা লড়ছো,  
এইভাবে শুধু ধোঁকাবাজদের  
আদেশে নিজেরা মরছো,  
ঘুরপাক চালে পড়ছো !

আত্মহত্যা করছো!   
নিজেরা - নিজেরা মারছো 
                 এবং মরছো !   

এতো বোকা হলে মানবজন্ম  
নিলে কেন তুমি বলো,  
আর দেরি নয়,  এখন থেকেই  
সাহসে এগিয়ে চলো !   

সতর্ক থেকো,  ওরা প্রস্তুত -- 
করে দেবে বানচাল -- 
তোমাকে বাঁধতে বারে-বারে ওরা  
বানায় তো ফাঁদ জাল !   

নিজেকে এখন প্রশ্ন টা করো -- 
কী হতে চাও ঠিক ! 
মানুষের মত মানুষ,  কিংবা  
নরকের নাগরিক?  

ফন্দিবাজরা রূপ বদলায় -- 
নানান কূটক চালে -- 
ঘরে ও বাইরে তারা তো সমান  
কৌশলে বিষ ঢালে ! 

চিন্তা টা করো গভীর এবং  
নিরপেক্ষ ও টান-টান,   
তবেই তো তুমি মানুষ চিনবে  
ঘরে ও বাইরে সমান !  

একবার ভেবে দেখতো বন্ধু,  
কী তোমার পরিচয়,   
উৎকৃষ্ট বা নিকৃষ্ট -- 
মিলে যাও কোনটায় ! 

এবার বলতো,  কী করতে চাও,  
করছো কি তুমি রাগ? 
নিজের শক্তি দিয়ে নিজেকেই  
মেরে হও সংবাদ !   

কাপুরুষেরা  তো এই বিশ্বে  
সব সেরা আসামি,  
তাদের জন্য সুবিধাটা দেওয়া --  
সম অপরাধ জানি !  

বুদ্ধিটা আছে,  চিন্তাটা আছে,  
আছে জ্ঞান আর সাহস,  
তবু যদি কেউ থাকতেই চাও  
উদ্ভটদের পাপোস --  

তাহলে তো ভাই তোমার জন্য  
দুর্দশা যারা দিচ্ছে,  
   তাদের কোথায় দোষ?  

জেনে রেখো  ভাই,  
    তারই আসে জয় ঠিক, 
চেতনাটা নিয়ে চরিত্রে নির্ভীক !    

রুখে দাঁড়ালেও মরবে,  
চুপ থাকলেও মরবে,     
কোনটা শ্রেষ্ঠ ভেবে দেখো তুমি,  
চুপ থাকা,  --- নাকি লড়বে? 
    
    ----------------------------
  ( দুপুর,  22 সেপ্টেম্বর 2020, 
   Ridendick Mitro )
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.