মন ভালো নেই শহরটার
বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে আমফান এর প্রলয় নাচনে শহর কলকাতার মনটা আজ ভারাক্রান্ত ! প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি, সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বহু মানুষ ভিটে হারা! শহরের মহীরুহ গুলোকে যেন জোরপূর্বক উপড়ে ফেলা হয়েছে! এখনো বহু এলাকা নিষ্প্রদীপ ! ইতি উতি পড়ে থাকা অসংখ্য গাছগাছালি গুলো যেন ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব লীলার বিবর্ণ ইতিহাস বইছে ! তবে ধীরে ধীরে আবার হয়তো স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসবে আমার প্রাণের শহরটা ! কিন্তু এর মাঝেও অসংখ্য গুজব ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক ও টুইটারে এবং অবশ্যই হোয়াটস অ্যাপে ! " আমফান এখন অতীত! মহা প্রলয় ঘটাতে আসছে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ"! হ্যাঁ, এইরকম শিরোনাম দিয়ে প্রচুর মিথ্যা রটনা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল সাইটে !
বাস্তবে নিসর্গ নামটি সত্যি, এবং আমফান পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম নামটি হবে 'নিসর্গ', এবং এই নামটি বাংলাদেশের দেওয়া ! আসলে ২০০৪ থেকে মোট ৮ টি দেশের ৮ টি করে নামের তালিকা, মানে ৬৪ তম নামটি ছিল এই অতি ভয়ংকর 'আমফান' ! কিন্তু তারপরে ? হ্যাঁ, গত ২৮ এপ্রিল দিল্লির মৌসম ভবন উত্তর ভারত মহাসাগর অঞ্চলে মোট ১৩ টি দেশের , সর্বমোট ১৬৯ টি নামের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, কাতার, ইয়েমেন, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, ইরান, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, মায়ানমার , ওম্যান - এই ১৩ টি দেশের ইংরেজি নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে সাজানো এইসব নামের তালিকা ! যেমন প্রথমেই বাংলাদেশের নাম, আর তাদের দেওয়া নামটি হল 'নিসর্গ', তার পরের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে কিন্তু আমাদের ভারত, সেই নামটি হবে 'গতি'! আসলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে নামটি সহজেই উচ্চারণ করা যায় এবং বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় !
যেমন, থাইল্যান্ডের দেওয়া নামটি ছিল আমফান ( আসলে উম পুন ) , যার অর্থ আকাশ ! এখানে বলে রাখা ভাল যে, আজকেও আকাশ মেঘলা এবং মাঝেমধ্যেই দমকা বাতাস বইছে ! কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আবার খুব শীঘ্রই আরও একটি ঘূর্ণিঝড় আসতে চলেছে ! বৃষ্টি হয়তো হতে পারে! কিন্তু সত্যিই কি আবার একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে ? আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে যে, এই মুহূর্তে তার কোনও সম্ভাবনা নেই ! খবরে প্রকাশ, আগামী ৯- ১০ দিন ঘূর্ণিঝড়ের কোনো সম্ভাবনাই নেই, আর পরবর্তী সময়ে যদিওবা ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়, তার অভিমুখ যে আমাদের পশ্চিম বঙ্গ হবে, তাও এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় ! পরিশেষে বলি, এই অতি সঙ্কটকালে ফেসবুক বা হোয়াটস অ্যাপের ভুয়ো খবরে বিশ্বাস করবেন না ! গুজবে কান দেবেন না !
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন