![]() |
ওয়াহিদা খাতুন |
ওয়াহিদা খাতুন
সকল শ্রদ্ধেয় গুণী কবি-সাহিত্যিকের প্রতি জানাই পবিত্র ঈদের মোবারকবাদ! যদিও প্রতি বছরের তুলনায় এবারের ঈদ পালিত হবে একদম অন্যরকম ভাবে!কারণটা আমরা সবাই জানি করোনার হাত থেকে বাঁচতে আমরা এই পরিস্থিতির স্বীকার!তাই ঈদের খুশিতে গা ভাসিয়ে চলার সময় নয় এখন,প্রত্যেকেরই এই বিধিনিষেধ যথাযথ ভাবে মেনে চলা উচিত!
অন্যদিকে বলতে চাই ঈদ মানে কী?কিভাবে এটাকে পালন করা উচিত! "ঈদ" মানে হচ্ছে খুশি!আর ঈদ মানে যদি খুশিই হয় তাহলে সেই খুশি সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলছি!
আমরা দেখি ঈদের সময় দামি পোশাক পরে আর দামি খাবার খেয়ে রাস্তায় আহ্লাদে আটখানা হয়ে ঈদের জোয়ারে গা ভাসিয়ে চলি!না,আমি এবারের কথা বলছিনা মোটেও কারণ এবার আমরা একটি পরিস্থিতির স্বীকার! ঈদ মানে যদি খুশি হয় তাহলে সেই খুশিটা নিশ্চয় সকলের জন্য সমান!সকলেই খুশিতে,আনন্দে কাটাবে!নাকি যাদের জন্য সারা বছরে দুঃখ নির্ধারিত তারা এই খুশির দিনেও দুঃখ করবে,আনন্দ করার অধিকার তাদের কী নেই?
ঈদের দিনে দেখি খাবার টেবিলে সাজানো বিভিন্ন ধরনের আইটেম!পায়েস,হালুয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের মিষ্টান্ন দ্রব্য,সেইসঙ্গে আতব চালের ধবধবে সাদা রুটি কোপ্তা,কাবাব কোথাওবা পোলাও,ফ্রাইড রাইসের ভুরিভুজি আয়োজন!কিন্তু পাশের বাড়ির দুঃখী পরিবার টি কি আয়োজন করলো সেদিকে আমরা নজর দিইনা!হতে পারে সে পঙ্গু?হতে পারে সে অন্ধ?হয়তো বা এমন অসহায় যাকে দেখার কেউ নেই?আমাদের খাবারের অংশ থেকে সবাই যদি সামান্য পরিমাণও তাদের দিই, আমার মনে হয় তাদের তাতে যথেষ্ট পরিমাণ খাবার হয়ে যাবে এবং আমাদেরও এমন কিছুই কমে যাবেনা!কারণ দুঃস্থের সংখ্যাটা খুবই কম বড়োলোকের থেকে!একটা পাড়াই যদি ৫০০জন পরিবার বাস করে তাহলে দুঃস্থের সংখ্যা হয়তো ১০জন!আমাদের আলনাভর্তি ঠাসা পোশাকের বাহার তা থেকে যদি একটা করে দিই তাহলে তাদেরও এই খুশির দিনটা খুশিতে কাটবে!আমাদের ছেলে-মেয়েদের এতো পরিমাণ পোশাক থাকে যে সেগুলি আলমারিতে পড়ে থেকে ছোটো হয়ে যায়,পরের বছর গায়ে ঢোকেনা তবুও কেনার তাগিদ!যদিও আমার বাচ্চা এখনো হয়নি যাস্ট উদাহরণ দিলাম।অথচ আশেপাশের অসহায় বাচ্চাগুলো ছেঁড়া জামাতেই এই খুশির দিনটা অতিবাহিত করছে! কি এমন এসে যায় কয়েকটি পোশাক ওই সাজিয়ে রাখা পোশাক থেকে তাদের দিলে!যেগুলো show মাত্র কোনো কাজে লাগেনা!
তাছাড়া আমরা যখন এতো দামী দামী পোশাক কিনি,সেখান থেকে কি ওই অনাথ শিশুটির জন্য একটি জামা কিনতে গেলে কি আমরা ভিখারি হয়ে যাবো!ভাবুন,বিবেক দিয়ে ভাবুন!ঈদ মানে যদি খুশি হয় তাহলে তারাও খুশিতে আনন্দে কাটাবে। নইতো এই ঈদ উৎসব পালন না করাই ভালো!শুধু তাই নয় দেখি কুকুর-বিড়াল গুলো পড়ে থাকা,ফেলে দেওয়া খাবার কুড়িয়ে খেলেও তাদের লাঠি দিয়ে তাড়ানো হয়,ছেঁই ছেঁই করে!কেন তারা তো আমাদের উচ্ছিষ্ট খাচ্ছে?টেবিলে এসে পাশে বসে তো আর খাচ্ছে না?যদিও উচ্ছিষ্ট খাবার দেওয়া উচিৎ নয়!আমার ত্রুটি মার্জনা করবেন। আমি শুধু বলতে চাইছি ঈদ মানে যদি খুশি হয় তাহলে সবাই আনন্দ করবে নয়তো ঈদ কথার সার্থকতা থাকলো কোথায়!
আবারও সকলকে ঈদ মোবারক জানিয়ে শুরু করছি গজল!
"ঈদ মোবারক "
ওয়াহিদা খাতুন
ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ,
খুশির দিনেও আজকে সবার দুই চোখে নাই নিদ!
কোলাকুলি করা নিষেধ মানতে হবে বিধিনিষেধ,
সবার মুখে যাচ্ছে শোনা করোনার সংগীত!
ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ!
ঈদগাহে জামাত হবেনা একসাথে খাওয়া যাবেনা
নতুন পোশাক খুশি মনে পরতে পারিনা,
আনন্দেতে খোলামেলা ঘুরতে পারিনা!
ঘরের ভিতর বন্দি হয়ে থাকতে হবে জীবন ভয়ে,
অদৃশ্য জীবাণু থেকে সবার বাঁচার তাগিদ,
ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ!
নেই যে শিশুর মুখে হাসি হারিয়েছে ঈদের খুশি,
আলতা,ফিতার বাইনাগুলো
করতে শুনিনা,
রক্ষা করো মসিবতে ওগো রব্বানা!
হালুয়া-পায়েস হয়নি যাদের
খোঁজটা নাওগো আগে তাদের,
দুখীর মুখে হাসি দিয়ে থাকবো সবাই সুহৃদ!
ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ!
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন