প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়াটাই বড় কথা : রতন বসাক

প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়াটাই বড় কথা : রতন বসাক
প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়াটাই বড় কথা : রতন বসাক

মানুষের জীবনে অসুখ-বিসুখ একটা স্বাভাবিক ঘটনা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এর সম্মুখীন মানুষকে অনেকবার-ই হতে হয়। বেশিরভাগ সময়ই মানুষ এই অসুখের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে যায় ঠিক চিকিৎসা পেলে। কখনো-সখনো মানুষ এই অসুখের কাছে পরাস্তও হয়ে যায়।

তবে চিন্তার বিষয় হলো এটা যে, মানুষের শরীরকে আমরা যদি নিজের থেকেই অসুস্থ করার ব্যবস্থা করে থাকি। আর সেই অসুস্থ হবার কারণটা যখন খুব দ্রুত অনেক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তখন একটা ভাবনার কারণ। আজ কিছুদিন হলো বিশ্বের মানুষের মধ্যে যে, এক ভয়ানক অসুস্থতার কারণ চলছে ; সেটার কথা আমি বলছি।

যে কারণেই হোক চীন দেশে সেই অসুস্থ হবার বীজ করোনা নামক ভাইরাস উৎপন্ন করে। প্রথমে সেই দেশের কিছু মানুষ আক্রান্ত হয়, তারপর সেখান থেকেই বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে খুব দ্রুত। চিন্তার আরও একটা কারণ হলো যে, এই ভাইরাস শুধুমাত্র মানবজাতির ক্ষতি করে থাকে। এখনো পর্যন্ত এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার মতো শক্তিশালী কোন ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। তাই আরো বেশি চিন্তার কারণ হচ্ছে।

আপাতত করোনা ভাইরাস এর থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা উপায় আমরা জানতে পেরেছি, সেটা হলো এর গ্রোথ চেনকে ধ্বংস করা মানে কোয়ারেন্টাইনে থাকা। অর্থাৎ পুরো বিশ্বে ও যে যার দেশে লক্ ডাউন করে সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখে যেটা আমরা করতে পারি। কিন্তু এই সিস্টেমকে কার্যকরী করতে গিয়ে এক ভীষণ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। একশত ভাগ কার্যকরী করা কোনো মতেই সম্ভব হচ্ছে না এখনো পর্যন্ত।

অজ্ঞতা, আর্থিক কারণ ও এখনো পর্যন্ত কিছু মানুষ একে সিরিয়াসলী নিচ্ছে না। ব্যক্তিগত কারণও অনেক থাকতে পারে। তবে মৃত্যুর চেয়ে বড় কারণ কোন কিছুই হতেই পারে না, এটা আমি মনে করি। যেভাবে দলবদ্ধ হয়ে মানুষ সরকারি লক ডাউন বাধা-নিষেধ না মেনে, নিজের রাজ্যে ফিরে যাচ্ছে পেটের দায়ে ; সেটা একটা বড় ভয়ঙ্কর চিন্তার বিষয়। জানি না এর কারণে আরও কতটা মারাত্মক হয়ে উঠবে আমাদের প্রত্যেকের জীবন।

ভয়ে আতঙ্কে মানুষ মাইলের পর মাইল হেঁটে হেঁটেই চলেছে নিজের বাড়িতে ফিরে যাবার জন্য। এই দীর্ঘ পথে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে ও অন্যান্য কারণে মারাও যেতে পারে। তবুও মানুষ নির্ভীক হয়ে চলেছে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ও অন্যের জীবনের ঝুঁকি বাড়ানোর জন্য। তাঁরা এখন যে কষ্টটা করছে, সেই কষ্টটা যদি তাঁরা পুরনো জায়গায় থেকে করতো ; তাতে সবারই ভালো হতো এটা আমি মনে করি ।

আসলে মানুষের মধ্যে একদমই ধৈর্য নেই। সবাই সবকিছু দ্রুত চায়, কে কার কত আগে নিতে পারবে। অনেকে আবার বেপরোয়া হয়ে নিজেকে হিরো প্রমাণ করতে চায়। মানুষ নিজের ভালো ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। এতে যে নিজেরও ক্ষতি হতে পারে, সেটা সে ভুলে বসে থাকে। অনেক মানুষ আছে যারা সময় থাকতে কোন প্রিকোয়েশন নেবে না। ক্ষতি হলে তখন পস্তাবে আর অন্যকে দোষারোপ করতে ভালোবাসে।

তাই বর্তমানের এই ভয়ঙ্কর কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষকে বুঝে শুনে চলতে হবে, আর এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে পথ চলা শুরু করতে হবে। এরপরও যদি মানুষের শিক্ষা না হয়, তাহলে আগামীতে এই পৃথিবীতে কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হবে সেটা ভেবে আমি ভীষণ উদ্বিগ্ন হচ্ছি। ঝড় আসে, ঝড় থেমে যায় । সেই ঝড়ের থেকে যদি শিক্ষা না নিই, তবেই সমস্যা আবার শুরু হয় ।
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.