বিদায় '১৯ , স্বাগত '২০ : পিনাকী চৌধুরী

বিদায় '১৯ , স্বাগত '২০ : পিনাকী চৌধুরী 
বিদায় '১৯ , স্বাগত '২০ : পিনাকী চৌধুরী     

আমাদের প্রেম অপ্রেমে ম্যারিনেট করা আটপৌরে অনিশ্চয়তার জীবনে এইবার সময় হল Happy New Year বলার। ফেসবুকে , হোয়াটস অ্যাপ এ অহরহ নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তা আসতেই থাকবে। কখনও আতিথেয়তার আতিশয্য , তো আবার কখনও বিষাক্ত কথার ছোবল , কখনও প্রেম , আবার কখনও অপ্রেম! কখনও আনন্দ , আবাষ কখনও বিষাদ - এইসব নিয়েই আপনার আমার এই বছরটা কাটলো একপ্রকার ! এখন সারা বিশ্ববাসী অধীর অপেক্ষায় , নতুন বছর কি বার্তা বহন করে নিয়ে আসে , তা জানার জন্য ! সম্ভবত পৃথিবীতে সবথেকে পুরানো উৎসব এই বর্ষবরণ। কিন্তু কি কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে এই বর্ষবরণের ?  সে বহুদিন আগেকার কথা , আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগে , খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে প্রথম বর্ষবরণ উৎসব চালু হয় মেসোপটেমীয় সভ্যতায়।

সেই মেসোপটেমীয় সভ্যতায় তখন আবার ৪ টি ভাগ ছিল। সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, অসিরিয় সভ্যতা এবং ক্যালডিয় সভ্যতা ! এদের মধ্যে ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় তখন প্রথম বর্ষবরণ উৎসব চালু হয়। এখানে বলে রাখা ভাল , সেই বর্ষবরণ উৎসব কিন্তু এখনকার মতো ১ জানুয়ারী পালন করা হতোনা। তখন পালিত হতো বসন্তের প্রথম দিনে। শীতের রুক্ষতা ও জড়তা কাটিয়ে যখন নব কিশলয়ের মধ্যে দিয়ে বসন্তের আগমন ঘটতো , প্রকৃতির সেই সুন্দর সাজ দেখেই তারা নতুন বছরের শুরু করতো এবং অবশ্যই আকাশে চাঁদ দেখেই তখন বছরের গণণা করা হতো । এই বর্ষবরণ উৎসব চলতো টানা ১১ দিন ধরে ! এরপরেই রোমানরাও জাকজমক সহকারে নববর্ষ পালন শুরু করে দিলো । এই রোমানরা আবার চাঁদ দেখে রীতিমতো ক্যালেন্ডার তৈরি করলো।

তবে তদানীন্তন সময়ে ওদের নববর্ষ পালন করা হতো ১ মার্চ । আর তখন বছরের হিসাবে মাত্র ১০ টি মাস ছিল । জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসের অস্তিত্ব ছিলনা । পরে সম্রাট  নুসা পন্টিলাস জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসকে ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভূক্ত করেন । তবে সেই তারিখহীন ক্যালেন্ডারের সমস্যাও ছিল বিস্তর। আকাশে চাঁদের বিভিন্ন অবস্থান দেখে তারা তখন মাসের বিভিন্ন সময়কে চিহ্নিত করতো । চাঁদ ওঠার সময়কে বলা হতো ক্যালেন্ডাস , চাঁদের মাঝামাঝি অবস্থাকে নুনেস এবং পুরো চাঁদকে ইডেস বলা  হতো । যদিও পরে জুলিয়াস সিজার এই ক্যালেন্ডারের পরিবর্তন ও পরিমার্জন করেন। তিনি প্রথম এই ক্যালেন্ডারে তারিখ বসিয়ে দিলেন।

তারপর জুলিয়াস সিজার সমস্যা দূর করতে তাঁর প্রখর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিলেন ! তিনি তখন চাঁদের হিসাব বাতিল করে সূর্যের হিসাবে নতুন বছরের ধারণাটি প্রনয়ণ করলেন । অতঃপর জুলিয়াস সিজার ৩৬৫ দিনে বছরের ঘোষণা করে দিলেন এবং সাড়ম্বরে ঘোষণা করলেন মার্চে নয় , নতুন বছর শুরু হবে ১ জানুয়ারী !  বাস্তবে তখন থেকেই যেন এক বর্ণময় অধ্যায় এবং নতুন যুগের সূচনা হল ॥
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.