শেষ দেখা : বিমান পাত্র

শেষ দেখা : বিমান পাত্র
শেষ দেখা : বিমান পাত্র

পদবি ছাড়িয়া গেছে ছেড়ে গেছে ঘর
স্মৃতি আছে যত্র তত্র বেদনা বিস্তর
অন্তর চাহে না তারে আড়াল করিতে
পলকের ক্ষণমাত্র আপনা হইতে
নিয়তির একি বিধি যারে জন্ম দিয়া
খুশি হবে একদিন তাহারে ছাড়িয়া
জন্মাবধি সুখ দুঃখ কত সহ্য করে
খেদ কভু রাখে নাই ভেদ কারো পরে
যাহা কিছু  যা পেয়েছে যেভাবে যখন
সবই তার আনন্দেতে করেছে গ্রহন।
সীমাহীন আনন্দের সে ছিল সন্ধানী
বসাইত সকলেরে একযোগে আনি
লুডুর ঘুঁটির শুধু নীল তার চাই
হারাবারে পিতাকেউ কোন দয়া নাই
আপনার পরাজয়ে আপনি বিভোর
ক্লেশহীন মুখ দেখি গর্ব হত মোর।
জননী রহিত চাহি তার পথপানে
বিলম্বের ক্লেশ তার বিঁধিত পরানে
অবাস্তব, অবান্তর যত ভ্রান্তি মিলে
গ্রাসীত মায়ের হিয়া প্রতি পলে পলে।
নিখিলের যত গ্লানি মায়ের অন্তরে
নিমেষই ধরা দিত এক এক করে
বিদীর্ণ করিত হিয়া বাছারে ভাবিয়া
অস্থির হইত মাতা শান্তি না পাইয়া
দেখিত যখন সেই হাসি মুখ নিয়ে
পথিমধ্যে অাচম্বিতে জননী সম্মুখে
মমতার মর্মভাষা সে যে বাক্যহীন
নদী যেন সাগরেতে হইল বিলীন।
আজ সে আপন ঘরে নিত্য কত কাজে
প্রবেশিছে ধীরে ধীরে গৃহিনী সমাজে
আপন সংসার নিয়ে বাড়ে যত দায়
ভুলাইবে মা পিতারে নানান সমস্যায়
শিশুদের যত্ন সাথে শ্বশুর শাশুড়ী
ক্ষীণ হবে মমতায় জনকের বাড়ি
সময় হবে না তার কহিবারে কথা
কাজ পাছে পড়ে রয় হেট হয় মাথা।
এইরূপে—
নিয়তির অমোঘ নিয়মে
বৃদ্ধ হয় মাতাপিতা প্রতি দিনে দিনে
জরা ব্যাধি বার্ধক্য যত উপহাস
অসহ্য সজ্জায় কাটে কত বর্ষ মাস
অসহায় অস্ফুটস্বরে বিস্ফারিত আঁখি
অন্তিম শয়নে চায় শেষ দেখা দেখি
করুণ নয়ন মার বহে অশ্রু ধারা
বোঝাইল দন্ড দুই মানিলনা তারা
মৃত্যুদূত আসিয়াছে বেলা অবসান
শেষ দেখা হইল না এতো অভিমান।

Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.