গুরু প্রসাদ যশ : একজন আদর্শবান কবি

১৯৬২ সালের ২২ শে সেপ্টেম্বর কবিশেখর কালিদাস রায়ের পুণ্যভূমি কড়ুই গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন কবি গুরু প্রসাদ যশ। পিতা প্রয়াত গোলকপতি জশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মা, আনন্দময়ী প্রয়াত। গ্রাম্য জীবন, সাত ভাই-বোনের সঙ্গে অভাব ও সংযমের জীবনকে ভাগ করে নিয়ে বড়ো হওয়া। বর্তমানে কাটোয়ায় স্থায়ী বাসিন্দা। 

সবার মতো গুরু প্রসাদও খেলাচ্ছলে লিখতে শুরু করেন। মনের অগোচরে কখন যে শরীর ও মন কবিতায় নিজেকে সমর্পণ করে বসে, তা কোনো কবিই টের পান না। তেমনি ভাবেই কবির জীবনেও কবিতা অগোচরে বাসা বাঁধে মনের গহীনে। আগেই বলেছি, কবিশেখরের পুণ্যভূমিতে কবির জন্ম। সে কারণে পারিপার্শ্বিকতাই কবির কবি হয়ে ওঠার হিরন্ময় হাতিয়ার। কবিশেখরের জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিতে নিতে কবিতায় নির্ভরতা, কবিতাকে ভালোবেসে ফেলা, এটা তো বাঙালির ঐতিহ্য।

গ্রামের পূর্ব-দিকে কাশীরাম দাসের জন্ম, পশ্চিম-দিকে কুমুদ রঞ্জন মল্লিক, উত্তর-দিকে পাঁচালিকার দাশরথি রায় এবং দক্ষিণে রয়েছেন কেশব ভারতী। বহু গুণী মানুষের পদচারণার ভূমি এই কাটোয়া মহকুমা। 

২০০৭ সাল থেকে কবিশেখরের জন্মদিন পালন করে আসছেন গুরু প্রসাদ যশ। ১৯৭৬ সাল থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে চলছিল এ কর্মযজ্ঞ। কবি শেখরের জন্মদিনে সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে কবিশেখর নামাঙ্কিত সাহিত্য সম্মান দেয়া হয় ২-৩ জন সাহিত্যিককে। প্রায় শতাধিক কবি সাহিত্যিকের সমাবেশ ঘটে। এছাড়া একটি ছোট পত্রিকা সম্পাদনা করেন কবি। আর নিয়মিত বসেন সাহিত্য আসরে।

এ পর্যন্ত ৪ টি কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ২ টি প্রকাশের পথে। এরসঙ্গে নিয়মিত `কবিশেখর' পত্রিকা প্রকাশ করেন। প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ : ১. বিজ্ঞাপনের সেই মেয়েটি, ২. যাত্রাদলের মেয়ে, ৩. করতলে হৃদয়রেখা, ৪. শ্রীচরণেষু মা। 

গুরু প্রসাদ মূলত আত্মপ্রচার বিমুখ। কবিতা লেখেন, কিন্তু কবিতাকে বাণিজ্যিক করার লোভ লালসা তাঁর নেই। লেখালেখি দীর্ঘজীবনে নতুন কৃত্তিবাস, অন্য ক্যানভাস, কৃতি এখন, সুইং হো স্ট্রিট, ইস্ক্রা, শুধু বিঘে দুই, রক্ত মাংস, অজয়, ফিনিক্স ইত্যাদি পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে লিখেছেন। সর্বোপরি তিনি একজন আদ্যপ্রান্ত কবিতা প্রেমিক মানুষ।

Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.