******************************
![]() |
বিদ্যুৎ ভৌমিক |
অথচ ঘুম ভাঙতে দেরি হয়েছিল
বিদ্যুৎ ভৌমিক
ক)
এতবার ইঙ্গিত দাও ; স্বপ্নে - স্বপ্নে অতল মৈথুনে শ্রীঘুম ভাঙুক
এই হাত পেতে নিতে চেয়েছি স্পন্দমান ওষ্ঠের ওম
সেজন্য কথা বলার প্রয়োজনে দাঁড়িয়েছি
ঘরের এক কোণে —
হঠাৎ এসময় মৃত্যুর মতো স্তব্ধ হয়ে আছে বাতাস
অশ্রুপাতের ভেতর দুঃখ পোড়ানো জ্বালা ভূগর্ভের অতল গভীর
কঙ্কাল গেহখুলে আকাশ দেখেছি বেরিয়ে এলে
আমি কালক্ষেপ না করে সারারাত বৃষ্টি পান করি বৈধব্য তৃষ্ণায় ~
এত দুঃখ এতকাল কোথায় রেখেছি ; সত্যি ভুলে গেছি — !
খ)
একবার ইঙ্গিত দাও ; স্বপ্নে - স্বপ্নে তবে মুখভরা চুম্বন দেব ।
এরপর নিশ্চিন্তে দুহাত তোমার দেহের আগুনে ডুবুক, —
এইখানে মন ঘামিয়ে লজ্জার অমোঘ
শৃঙ্খল ছিল নিষেধহীন
অথচ ঘুম ভাঙতে দেরি হয়েছিল — জন্মে এক বছর পর !
মাঝপথে আকুল হয়েছিল পথচারির অতলান্ত আবেগ
সেদিন শ্রাবণ গন্ধে কবিতা দাঁড়িয়েছিল নগ্ন স্ত্রীলোকের বেশে,
আকাশ ভেজা বাতাস রাতে শরীর ধ্যানে কত কি এঁকেছি
এখন বৃষ্টি শেষে প্রেম যেন বৃষ্টির গান গেয়ে ~ গেয়ে ফেরে !
গ)
কেউ একজন ঘুমের ভেতর প্রাণপনে ছুটে এসে জানিয়ে দিল
আজ নতুন করে সেই দিনগুলোর মৃত্যু হবে —
মস্ত একটা কাজ ফেলে রেখে আসা হয়েছে
কাঁধের উপর সৌরদ্বীপের কপাল ভেজা ছায়া পড়লে
মাঝপথে বাতাস থমকে যায় !
কী এক কঠিন লজ্জায় স্নান ঘরের ভেতর মেঘ পড়ুয়া আমি
সারাদেহ ভেজাই এক সমুদ্র জলে ! কলঙ্ক এবং পাপ ****
ঘ)
কাল থেকে প্রত্যেক পাতাতেই একই কথা লিখেছি
এতকাল নদী মানেই ~~~ নদী--ই জানতাম ।
অথচ এখন ; নদী মানেই তুমি শুধু তুমি ****
এই বয়স যেন স্বপ্ন সাধক
কাজল কালো রাত্রির মত ঘন কিম্বা নিঃস্ব - সম্পূর্ণ
এই বয়সে হঠাৎ ডুবে গেলে মাথার উপরের চাঁদও মুখ ফিরিয়ে নেবে ! আজ এই রাস্তাটা আমার ছায়ার উপর এবং নীচে
শুয়ে আছে *** ভেতর থেকে নিঃশ্বাস যেন উদ্ভাসিত, তাই বলে
প্রতিদিনের পোশাকে এক চিন্তা মিশিয়ে জবরদস্ত
মাতাল হবনা একবারও !
ঙ)
গোপনে বিষ পান করতে গিয়ে আদেশ পেয়েছিলাম
আরও কয়েকটা বছর যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার
এতদূর হেঁটে এসেও অবশেষে মৃত্তিকালগ্ন ,
সেটা অনেকটা মনের কাছে সাচ্চা হয়ে থাকা !
তোমার কাছে ক্ষমা চেয়েও দেখেছি ; অর্ধেক নিঃশব্দ ছিলে —
চোখের অতল বর্ষণে তখন বুক ভিজেছিল
অদ্ভুত চুপ করে কবিতার প্রত্যন্ত গভীরে ডুবে যেতে যেতে
বুকের স্পন্দন সেদিনের মতো স্তব্ধ হয়েছিল —
পুনশ্চ আলোর পেছনে এসে অবিশ্বস্ত খেলা
দুই চোখ দিয়ে বলা গেল !
শেষ রাতে বাতাসে উড়ল এক মুঠো স্মৃতি
স্বপ্নের ভেতর শরীরখানা পেতে ধরতেই তুমি ঘুম ভাঙিয়ে
জড়িয়ে ধরলে আমায় !
চ)
কিছু একটা ভুলতে চেয়েছি, অপরাংশে রোদে পুড়ে যায় মন, —
একবার ইঙ্গিত দাও তবে ভালোবাসা নিতে পারি বাগান ভর্তি করে
এই হাতে মিথ্যা ছোঁয়ার অর্থ মায়াপাশে জড়ানো নিজেকে
এতদিন এই বিছানায় শুয়ে তোমার পাশে একা হয়েছিলাম
গভীরে এককালের অতলান্ত তোলপাড়
এখনও খেলা করে পার্থিব ম্যাজিকের টানে !
কবে থেকে মুখোমুখি, কবে থেকে বৃষ্টির কাছে আমার যত যন্ত্রণার
কথা বলে গেছি ****
ঢেউয়ে তরঙ্গে ভেসে গেছে সব ! এসো প্রথম দিনের মত
তোমার কাছে সহজে নগ্নতা ছড়াই
প্রিয় পাখিদের যোজনব্যাপী আকাশে উড়ে যেতে হবে
এই সময় অন্তরীক্ষ থেকে কবিতারা কথা বলুক প্রতিতুলনায় !!!
কবিতা লেখার ব্যাপারটা একেবারেই অল্প বয়সেই মাথার মধ্যে
ঘুরতো - ফিরতো । আজ্ঞে হ্যাঁ, কবি বিদ্যুৎ ভৌমিকের কথা এখানে বলা হচ্ছে । কবি বিদ্যুৎ নিজেকে এই কবিতার জগতে একটু - একটু করে চিনিয়েছেন, এবং এই মূহুর্তে তিনি বেশ কয়েকটা দেশে ভীষণ জনপ্রিয় । জন্ম ১৯৬৪ পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ঐতিহাসিক শহর শ্রীরামপুরে । একমাত্র কবিতাকেই উপজীব্য করে কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক নিজের দক্ষতায় নিজের পায়ের মাটিকে শক্ত করে তুলেছেন । বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন কবিতা লেখার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য । ২০১৫ সংবাদ এখন থেকে বাংলাশ্রী নামক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন ।
আজ আমাদের মধ্যমণি তিনি এই সময়ের বিশিষ্ট কবি ব্যক্তিত্ব —
বিদ্যুৎ ভৌমিক । কলকাতার বেশ কিছু বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং RADIO JU90.8 MHZ FM এর বিশেষ কবিতা নির্ভর অনুষ্ঠানে নিয়মিত ভাবে অংশগ্রহণ এবং কবিতা পাঠের সাথে সাথে কবি বিদ্যুৎ - এর কবিতামনস্ক সাক্ষাৎকার দর্শক ও শ্রোতাদের আরও কাছে টানে ।
কবির প্রতি রইল অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা । তাঁর
দীর্ঘায়ু কামনা করছি *** সাংবাদিক ও লেখক ডঃ আদিত্য বসু USA //
¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন