প্রেতকঙ্কালের প্রতিশোধ চাই না
রায় সুহৃদ
আমাকে কী শুনতে পাচ্ছো, শ্বাপদ-শকুনের দল?
দেখতে পাচ্ছো আমার কামড়ানো গালের ঝলসানো কালসিটে একখণ্ড রুটি?
দেখো, আমাকে শুনো,
একটিবার তোমার রক্তলিপি চোঁখে ধর্ষণের অক্ষরগুলো দেখো।
আড়চোখে হলেও আমার এই শরীরের পঁচা মাংসের দিকে তাকাও।
আমি এখনও যে আমার মেরুদণ্ডে ভর দিয়ে বিলক্ষণ চলেফিরি,
আমার বুভুক্ষু মস্তিষ্ক আর যকৃতের কাজ যে এখনও সচল,
আমার ইন্দ্রিয়ে এখনও মিছিল তুলে কালো রঙের সেই রাত-সেই বিভৎস নরক!
সেই রাতে কেনো চাঁদ লুকিয়েছিল পাহাড়ের ঢলে?
কেনো আমার শিশুর আর্তচিৎকারে কাঁপুনি দেয়নি ধরণী?
কেনো হায়েনার বুটে নিস্তব্ধতা নেমেছিল এই অরণ্যে? কেনো?
কেনো নামেনি ভূমিকম্প?
কী দোষ ছিল, বলো।
বলতে হবে না, ভয় পেও না।
মিনতিগুলো রাখো।
এই, ভয় পাচ্ছো কেনো?
আশ্চর্য! আমি প্রতিশোধ নেব না, ছিনিয়ে নেবো না আমার ছেঁড়া চাদর
আর পাজামায় লেগে থাকা থাকা পবিত্র রক্ত।
ভয় পেও না।
আমি প্রেতকঙ্কালের প্রতিশোধ চাইনা।
আমার শিশুটির উজ্জ্বল চোঁখটাকেও চাই না।
চাই না দেহের ঋণের সুদ!
চাইনা স্বামীর উত্তেজিত সঙ্গমের অনুশীলন।
আমি যা চেয়েছি, তা অতি সামান্য। খুব নগণ্য।
যেভাবে বুনোকুকুরগুলো
ভক্ষণ করে ভাগাড়ের শিশুকে-তার মতো সামান্য।
যেভাবে নারীর চোঁখের কামকে মনে করা হয় ছেলেখেলা মার্বেল -ঠিক তেমন নগণ্য।
যেভাবে হতভাগা পোড়ামুখো সন্ত্রাশী ছেলেটা মাকে পিটিয়ে জখম করে-তেমন নগণ্য,
অতি সামান্য! যেভাবে পার্কে, স্ট্রিটে, রেস্তোরায় রোপিত হয়
অপবিত্র শুক্রাণু চর্চা-তেমন সামান্য।
আমি চাইনি আমার জন্য কিছু।
চাইব না তেমন কিছু। বিশ্বাস করো।
আমি চাই,তোমাদের চেতনার মণি উজ্জ্বল হোক।
দৃঢ়, মজবুত হোক তোমাদের লাল রঙের পতাকা -স্বপ্নের নিশানা।
তোমার মূর্তিতে লেগে থাকুক পরাগের সুগন্ধি।
আমি তোমাদের প্রেম চাই, ভালোবাসা চাই।
গোলাপের পাপড়ির ভাঁজে আমি মুক্ত,সজীব তোমাকে চাই-যে মুক্তিযুদ্ধ
জানে-যে এই দেহের পতাকে প্রণাম করে;
আগলে রাখে বুকে সতর্কে -যে আমাকে খুঁজে স্বাধীনতার ঘোষণা বক্ষে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন