![]() |
বাঁশিওয়ালা : সুচরিতা |
এক বাঁশিওয়ালা রোজ ডাক দিয়ে যায়
কোনোই কারণ নেই সেই ডাকে
তবু ডেকে যায়।
হাজার কাজের ভিড়ে সেই ডাক শুনে কি
আমার যাওয়ার জো আছে?
একদিন বিরক্ত হয়েই বলি
কেন বাজাও বাঁশি?
কাল যদি আবার শুনি
তোমার বাঁশি আমি ভেঙে দিয়ে যাবো।
মুচকি হাসিতে তার চোখদুটো জ্বলজ্বল
করে ওঠে, মুখে বলেনা কিছুই!
পরের দিন আবার সেই সুর..
কেন বোঝোনা তুমি ওই সুর
আমাকে পাগল করে দেয়।
আসবে না আর কাল থেকে
যদি আসো চেলা কাঠ ছুঁড়ে মারবো।
চেলা কাঠের ভয় যে সে পায়নি
পরদিন সে প্রমাণ করে দিল।
আমিও দরজায় খিল আঁটলাম
সুর গুলো ঘরের এ দেওয়াল,
ও দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে আছড়ে পড়ছে।
ধাক্কা দিচ্ছে আমার হৃদপিণ্ডে
বাঁশিওয়ালা আজ উচিৎ জবাব পাবে।
আজ থেকে আর এই মুখ সে দেখতে পাবেনা।
একদিন, দুদিন...
এই করে বেশ কিছুদিন...
আর তার বাঁশি বাজে না।
আমি রান্না করি, ঘর গোছাই
জল আনি নদীর থেকে
বাঁশির সুর আর শুনিনা।
আমায় না দেখতে পেয়ে চলে গেছে
বুঝি নতুন দেশে, নতুন কাউকে
শোনায় হয়তো বাঁশি।
ছলছল করে ওঠে চোখের কোণ
বুকের মধ্যেটা গুমরে ওঠে।
শুধু বাঁশি শোনাবে বলেই আসতে তুমি?
বাঁশিওয়ালার সুরই তার প্রেম বুঝি
আমায় হয়তো পাগল শ্রোতা ভেবেছে।
বোকা মেয়ের সব কাজ ফেলে ছুটে যাওয়ার
মধ্যেই তার সৃষ্টি সুখ ছিল হয়তো।
বাঁশি আর বাজে না,
অন্য শ্রোতা পেয়েছে বুঝি..
মাধবীলতায় কুঁড়ি এসেছে,
জুঁইফুলের গন্ধ মাতাল করা,
জানলা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে পূর্নিমার চাঁদের আলো,
ভাসিয়ে দিচ্ছে চরাচর।
হঠাৎ দেখি জানলা নিচে ওটা কী?!
সেই বাঁশি.. সাথে একটা ছোট্টো চিরকুট
'ওগো সখী, তোমাকে ছাড়া
এ বাঁশি আর বাজবে না!'
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন