বিদ্যার দেবী মা সরস্বতীর আরাধনা : পিনাকী চৌধুরী

বিদ্যার দেবী মা সরস্বতীর আরাধনা : পিনাকী চৌধুরী 
বিদ্যার দেবী মা সরস্বতীর আরাধনা : পিনাকী চৌধুরী 


মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথি হল এমন একটি পবিত্র দিন, যখন বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভক্তিভরে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করার আগ্রহ থাকে তুঙ্গে ।দেবী সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও এই পুজোর বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে । তবে প্রাচীন বাংলার তান্ত্রিক সাধকরা সরস্বতী সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পুজোর করতেন । সে বহুকাল আগেকার কথা, ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতি বছর শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে ধোয়া চৌকির ওপর তালপাতা ও দোয়াত কলম রেখে পুজো করার রীতি প্রচলিত ছিল । শ্রী পঞ্চমী তিথিতে ছাত্ররা বাংলাগ্রন্থ , শ্লেট, দোয়াত কলম রেখে, ' সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে / বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমস্তুতে ' এই পুষ্পাঞ্জলি দেবী দেবী সরস্বতী চরণ তলে অর্পণ করে। সরস্বতী মূলত বিদ্যা ও সংগীতের অধিষ্ঠাত্রী দেবী।  এই পুজোর কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রী প্রয়োজন হয় যেমন অভ্র-আবীর আমের মুকুল দোয়াত-কলম যবের শিষ বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল। আমাদের সমাজের লোকাচার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এবং এই সরস্বতী পুজোর আগে কুল খাওয়া সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ এবং সরস্বতী পুজোর দিন কিছু লেখা অনুচিত। সনাতন হিন্দুদের প্রায় প্রতিটি ঘরেই মহাসমারোহে এবং আড়ম্বরে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়। তিনি বিদ্যাদেবী জ্ঞানদায়িনী বীণাপাণি কুল ও প্রিয়া প্রিয়া প্রভৃতি নামে অভিহিত । দেবী সরস্বতী পুজোর দিন অনেক বাড়িতে হাতে খড়ি এবং ব্রাহ্মন ভোজন এর আয়োজন করা হয় । পুজোর দিন ছাত্র ছাত্রীদের আগ্রহ থাকে তুঙ্গে । এই দিন ভোর বেলা ছাত্রছাত্রীরা স্নান সেরে পবিত্র ভাবে স্কুলে স্কুলে হাজির হয় এবং ভক্তিভরে দেবী সরস্বতী কে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করে । সন্ধ্যেবেলায় আবার অনেক জায়গায় বিচিত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । সরস্বতী পূজার পরের দিন থেকে শীতল ষষ্ঠী নামে অভিহিত করা হয় । ঐদিন অনেক বাড়িতে অরন্ধন পালিত হয় ।
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.