![]() |
কিংবদন্তি বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী |
প্রশ্ন :- মূকাভিনয় জগতে বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী এখন একটি ব্র্যান্ড নেম, আপনার অনুপ্রেরণা কে ?
উত্তর :- ব্র্যান্ড নেম কিনা জানিনা, তবে নিঃশব্দতার শিল্পরূপ এই মূকাভিনয় । আমি নিঃশব্দে এবং নীরবে কাজ করতে ভালোবাসী । দীর্ঘ ৫৪ বছর ধরে এই কাজটা কে ভালবেসে মঞ্চে এখনো পদসঞ্চার করতে পারছি । ১৯৬৪ সালে যখন প্রথম মূকাভিনয় মঞ্চস্থ করি তখনই দর্শকদের বাঁধভাঙ্গা করতালি আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল । অদ্যাপি প্রতি মঞ্চে দর্শকদের করতালি আমাকে বাড়তি প্রেরণা দেয় " ।
প্রশ্ন :- মেঝে থেকে স্টেজে আসার পথে কতটা বাধার সম্মুখীন হয়েছেন ?
উত্তর :- বাধা একটি ছোট্ট শব্দ, কিন্তু স্মৃতি রোমন্থনে বড়ই বেদনা জাগে ! তবে আমার জীবনে যত বাধা এসেছে ততই যেন আমি নিজেকে নতুনভাবে চিনতে শিখেছি এবং অবশ্যই জানতে ও শিখেছি । শিল্পী চলার পথ সব সময় মসৃণ হয় না, বন্ধুর উপত্যাকা পেরিয়েই তবেই সমতট দেখা দেয় " ।
প্রশ্ন:- নির্বাক অভিনয়ের ক্ষেত্রে মুখজ অভিব্যক্তি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ?
উত্তর :- মূক আর মুখ - এই শব্দ দুটি নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভ্রম দেখা দেয় । মুক অভিনয়ের ক্ষেত্রে মুখের ব্যবহার অপরিসীম । তবে শুধু মুখজ নয় , দেহের ভাষাই হল মূকাভিনয় । এই দেহের সমস্ত ভাষা গুলি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা একজন মূকাভিনয় শিল্পীর আবশ্যক । আর মুখজ অভিব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই । মুখজ অভিব্যক্তির ৩ টি জোন , তথা :- ফ্রন্ট্যাল ,বাকেল এবং জিনাল ।"
![]() |
পিনাকী চৌধুরী |
উত্তর :- হ্যাঁ, আজকের দিনে বিশেষত আজকের সমাজে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রয়োজন আছে। কিন্তু ট্র্যাডিশনাল নিউজ আউটলেট গুলোর সাংবাদিক বর্গের প্রতি আমার প্রচন্ড আস্থা ও ভরসা জায়গায় রয়েছে ' ।
প্রশ্ন :- এই বয়সে নিজেকে ফিট রাখেন কিভাবে ? মানে আপনার মূলমন্ত্র কি ?
উত্তর :- " অবশ্যই নিষ্ঠা, আত্মবিশ্বাস এবং দর্শকদের করতালি । আমি প্রায় ছয় বলে থাকি আমার অভিজ্ঞতা ৬৬ বছরের আর আমার বয়স ২১ বছর " ।
প্রশ্ন :- আপনার মূকাভিনয় জীবনের ৫০ বছর অতিক্রান্ত । সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন কিভাবে ?
উত্তর :- সেই ১৯৬৪ সালের ১৫ আগস্ট থেকে আমার মঞ্চে হাটা শুরু । তারপর থেকে বিভিন্ন মঞ্চে illusory walk, Stationary walk এখনো করে চলেছি " ।
প্রশ্ন :- বেশ কয়েক মাস আগে আপনার অনুষ্ঠান চৌকাঠে চুয়ান্ন ' তে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের করতালি কি আপনাকে বাড়তি মাইলেজ দিয়েছিল ?
উত্তর :- অবশ্যই ! দর্শকদের করতালি আমাকে প্রতিদিনই নতুন নতুন চিন্তা ভাবনার খোরাক যোগায় এবং এগিয়ে যেতে সাহায্য করে ।"
প্রশ্ন :- সৃষ্টিশীল মানুষ মাত্রই তার একটা নিজস্ব জগত থাকে, আপনার ক্ষেত্রে কি সেই জগৎ ?
উত্তর :- আমার সেই জগৎ হল আমার অবৈতনিক মূকাভিনয় শিক্ষা কেন্দ্র ' মিনি মাইম, মাইন ' সংস্থার প্রতি আমার নিবেদিত প্রাণ ।"
প্রশ্ন :- নিজের পরিবার আর মূকাভিনয় জগতের মধ্যে সমতা রক্ষা করেন কিভাবে ?
উত্তর ::- " সেই অর্থে সমতা রক্ষার প্রশ্নই ওঠে না ! সে দিক দিয়ে আমি খুবই ভাগ্যবান , কারণ আমার স্ত্রী অরুনা নিঃশব্দে সংসার চালনা করে সমতা রক্ষা করে চলেছেন । আর আমার পুত্র জিৎ , সেও একজন কৃতি মূকাভিনয় শিল্পী " ।
প্রশ্ন :- শুনেছি , আপনি স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত । স্বামীজীর বাণী কি আপনার জীবনে প্রভাব বিস্তার করে ?
উত্তর :- একথা অনস্বীকার্য ! স্বামী বিবেকানন্দ আমার জীবনের আদর্শ । স্বামীজীর জীবনালেখ্য যে পূর্ণাঙ্গ মূকাভিনয় আমরা করেছি , তা আমার জীবনের সেরা কাজ। ১৩৬ টি চরিত্র সমৃদ্ধ মূক নাটকে প্রায় ৩০ জন অভিনেতা কে দিয়ে মঞ্চস্থ করানো হয়েছে । আজও আমি স্বামীজীর বাণী গুলি কে অনুসরণ করে চলেছি এবং ভবিষ্যতেও চলবো ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন