অল্প স্বল্প সুন্দরী কন্যের গল্প : পিনাকী চৌধুরী

অল্প স্বল্প সুন্দরী কন্যের গল্প : পিনাকী চৌধুরী 
অল্প স্বল্প সুন্দরী কন্যের গল্প : পিনাকী চৌধুরী 

সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে সোশ্যাল সাইটের জাল ! অনেকেই আবার এই ফেসবুককে আদর করে আজকাল ' মুখপুস্তিকা' নামেও অভিহিত করেন ! সে যাই হোক, আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে এই ফেসবুকেই  সঙ্গে আলাপ হয়েছিল এক ভিনদেশী বাঙালি কন্যের সাথে আলাপ হয়েছিল কলকাতাবাসী এক তরুণ ফটোগ্রাফারের ! সুন্দরীর ডাগর দু'টি চোখের চাউনিতে লুকিয়ে ছিল না বলা কিছু কথা ! প্রথম প্রথম তেমন একটা কথা হতো না ওই দু'জনের মধ্যে , কিন্তু সময় গড়াতে ক্রমে ক্রমে আলাপ গভীর থেকে গভীরতর হয় ! সেই সুন্দরী কন্যের বাংলা ভাষার দখল ছিল অ-সা-ধা-র-ণ !  সে সেই তরুণ ফটোগ্রাফারকে ডাকতো ' পিদিমের আলোয় দেখা রাজপুত্র' নামে! আর কলকাতার ফটোগ্রাফার তাকে ডাকতো ' ভিনদেশী তারা' নামে ! মাঝেমধ্যেই সেই ভিনদেশী তারা ফেসবুকের ইনবক্সে তাকে বার্তা পাঠাতো ' ব্যস্ত আছো ? রাতে বাসায় ফিরে আমাকে ম্যাসেজ করো , তোমার অপেক্ষায় থাকবো " এই বোলে । কথায় কথায় একদিন সেই তরুণ ফটোগ্রাফার জানতে চাইলো " তুমি কি করে এতো সুন্দর বাংলা বলো "? উত্তরে স্মিত হেসে সেই কন্যে জানিয়েছিল " আমি প্রচুর বাংলা সাহিত্য পড়েছিগো "! একদিন সেই কন্যে কথা প্রসঙ্গে বললো " তোমাদের ওখানে তো আনন্দবাজার পত্রিকা খুবই জনপ্রিয় ও প্রাচীন পত্রিকা " !  ইন্টারেনেটে প্রেমের সম্পর্ক আরও যেন গাঢ় হল ! একদিন একান্ত অবসরে তরুণ ফটোগ্রাফার সেই সুন্দরী কন্যেকে ম্যাসেজ করলো " আচ্ছা, ভুতের রাজা তোমাকে তিনটি বর দিতে চাইলে তুমি কি প্রার্থনা করবে ?" উত্তরে কন্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জানিয়েছিল " শুধু প্রার্থনা করবো, তোমাকে আমার দেশে , আমার কাছে এনে দিতে "! এক বৃষ্টি ভেজা গভীর রাতে সেই সুন্দরী কন্যে ফটোগ্রাফারকে বললো " জানো রাজপুত্র, আমাদের এই শস্যশ্যামল বাংলাদেশের বর্ষার ছবিটা বেশ নান্দনিক ! আর আমার আবার জল দেখলেই ইচ্ছে হয় সাঁতার দিই "!  কথাগুলো শুনে তরুণ ফটোগ্রাফার বলেছিল " তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে আমার এই মুহূর্তে তোমার দেশে গিয়ে উপস্থিত হই "! আবেগের বশবর্তী হয়ে সুন্দরী কন্যে বলেছিল " তবে চলে এসো আমার দেশে, আমার কাছে.....আমাতে মিশে যাও "! সেই সুন্দরী কন্যের প্রতিটি কথায় যেন লুকিয়ে থাকতো আবেগের আতিশয্য ! ঠিক যেন পাশের বাড়ির মেয়ের স্বতঃস্ফূর্ত বাক্যালাপ ! কিছুটা গায়েপড়া মেয়েদের মতন ! একদিন তরুণ ফটোগ্রাফার ম্যাসেজ করলো " সময় করে একবার আমাদের এই কলকাতায় চলে এসো, আমি তোমাকে সারা কলকাতা ঘুরিয়ে দেখাবো "! উত্তরে সে জানিয়েছিল " আমিতো হাত বাড়িয়েই রেখেছি, এইবার শক্ত হাতে তোমার ধরবার পালা "! এযেন ঠিক বহু দূরে অবস্থান করেও একে অপরকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যত জীবনের রঙিন স্বপ্ন দেখবার আখ্যান ! কিন্তু না, শেষ রক্ষা হয়নি ! এই দু'জনের মধ্যে যোগাযোগটা আস্তে আস্তে কমে আসে ! একদিন ফটোগ্রাফার ম্যাসেজ করলো " ভিনদেশী তারা, আমাদের যখন আর দেখাসাক্ষাৎ হবার কোনো সম্ভাবনা নেই, তাই বোধহয় আর যোগাযোগ রাখাটাও অপ্রয়োজনীয়, অন্তত আমার কাছে । তাই তোমাকে আমি আর কিছুক্ষণ বাদেই ব্লক করবো " ! কাঁপা কাঁপা গলায় কন্যে উত্তর দিয়েছিল " আমি তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম ! আর তাই বোধহয় তুমি আমাকে চরম অসম্মান করলে ! ভাল থেকো "!
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.