![]() |
মৃদুল শ্রীমানী |
অরণ্যচণ্ডী বনদুর্গার সাথে কয়েকটি মুহূর্ত
মৃদুল শ্রীমানী
আজ আমাকে নিয়ে চলতে চলতে গাড়ি ঢুকে গেল মিরিকের অরণ্যে, এমন সময় আমার পথ রোধ করে দাঁড়ালেন অরণ্যচণ্ডী বনদুর্গা। দেবী সিংহবাহিনী। আমি গাড়ি থেকে নামলে সিংহ চঞ্চল হয়ে উঠল।
দেবী বললেন, তুমি আমাকে ভয় করো না?
হেসে বললাম, ভালবাসার মানুষকে ভয় করব কেন?
সহসা দেবীর চোখে ভ্রূকুটি।
ভালবাসার মানুষ মানে? জানো আমি পরব্রহ্মস্বরূপিণী, দেবাদিদেবের নিত্য পূজনীয়া!
বললাম, দেবি, তোমার মতো সুন্দরী কবির জিহ্বায় বসতি করে নিজেই নিজের স্তবগান গেয়েছ। ব্যাধের হাতে বনের ক্রৌঞ্চ মিথুনের অকালমৃত্যু দেখে রত্নাকরকে দিয়ে কবিতার জন্ম দিয়েছ। সুবর্ণগোধিকা সেজে কালকেতুকে ছল করে দেখা দিয়ে তার ঘরে বসে ফুল্লরার দুঃখবাণী শুনেছ। ঈশ্বরী পাটনির কাঠের পিঁড়িতে পা দুখানি রেখে ম্যাজিক দেখিয়েছ। আমি কিন্তু তোমাকে বলব না, আমার সন্তানের জন্য নিত্য দুধভাতের ব্যবস্থা করে দাও।
দেবী স্খলিত গলায় বললেন, তবে তুমি কি চাইবে?
বললাম, আমাদের কবি গেয়ে গেছেন, সুখে আমায় রাখবে কেন, রাখো তোমার কোলে, যাক না গো সুখ জ্বলে... কবি ধর্মে ওর চেয়ে বড়ো চাওয়া নেই।
আমার কোলে আসবে? এখনই? দেবী অবাক।
সিংহ কি ভেবে একটু কেশর ঝাড়া দিল।
আমি দেবীকে বললাম, আমার এখনো কিছু কাজ করার আছে, তবে তুমি আমার ব্রহ্মরন্ধ্রে সর্বদা বিহার করো, জানি।
কি করে জানলে?
তোমার নূপুরের শব্দ শুনি কখনো কখনো..
হঠাত ড্রাইভার বলল, রাস্তা ক্লিয়ার, আপ আইয়ে সাহাব। গাড়ি চলতে শুরু করল।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন