মৃদুল শ্রীমানী
মহকুমা শাসক আমাকেই পাঠালেন
কার্গিল রণাঙ্গন থেকে কফিনে শুয়ে
শহীদ আসবেন পৈতৃক গ্রামে,
শেষ প্রণাম জানাতে আসবেন জন্মভূমিকে,
বাড়ির আমবাগানকে,
ফুল কুড়োনোর বকুলগাছকে ।
আমি পেটি অফিসার,
তবু আমাকেই পাঠালেন।
তরতাজা যুবক
কফিনে শুয়ে গ্রামে ফিরলে
কেউ যদি প্রশ্ন তোলে
কীসের সীমান্ত, আর কার প্রাণের বিনিময়ে
এত কথা চালাচালি ।
যদি তাতে রাষ্ট্রবিরোধী রঙ লাগে
মুহূর্তে তৎপর হয়ে তাকে সামলে নিতে হবে।
কথার কুশলতায়।
গ্রামজনের গ্রে ম্যাটারে সেঁধিয়ে দিতে হবে দেশপ্রেম।
মিলিটারি ট্রাক এসে পৌঁছল গাঁয়ে
বালকেরা অবাক হয়ে দেখে বড়ো বড়ো চাকা ।
জওয়ানরা নামলো ভাবলেশহীন মুখে।
কফিন নামলো নিচে,
শেষ নমস্কার জানাতে
শেষ প্রণতিটুকু ।
মা এসে আছড়ে পড়লেন
শহীদের মা।
মা মাটিতে লুটোচ্ছেন।
আর এলেন স্ত্রী,
তার চোখে কান্না নেই, তরল নেই।
শুধু কঠিন হাহাকার স্তব্ধ হয়ে আছে।
আমি তরুণীর কোলে শিশুটি বসিয়ে দিলাম,
তাকে বুকে চেপে কান্নায় বাঁধ ভাঙল নদী,
কবেকার পুরোনো কবিতা
গান হয়ে ছড়িয়ে গেল আকাশে আকাশে ...
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন