আলেকজান্ডার ইসায়েভিচ সলঝেনিৎসিন
মৃদুল শ্রীমানি
আজ, আগস্টের তিন তারিখটি এক সাহিত্যিকের প্রয়াণ দিবস। তিনি গুলাগ আর্কিপেলাগো খ্যাত আলেকজান্ডার ইসায়েভিচ সলঝেনিৎসিন। ১৯১৮ এর ডিসেম্বরের এগারো তারিখে রাশিয়ায় জন্মেছিলেন। মারা যান ২০০৮ এর আগস্টের তিন তারিখে। ১৯৪৫ সালে এক বন্ধুর কাছে ব্যক্তিগত চিঠিতে রাষ্ট্র প্রধান ও পার্টির প্রধান স্ট্যালিনের সমালোচনা করার দায়ে সলঝেনিৎসিনের আট বৎসরের কঠোর সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ওই কারাবাসের অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর প্রথম উপন্যাস 'ওয়ান ডে ইন দ্য লাইফ অফ ইভান দেনিসোভিচ'। সে বই বের হল ১৯৬২ সালে। ১৯৬৮ সালে বের হল আরেক উপন্যাস ক্যানসার ওয়ার্ড। ১৯৭০ সালে পেলেন সাহিত্যকৃতির জন্য নোবেল পুরস্কার। সোভিয়েত ব্যবস্থার নাম করে যে বাস্তবে একটা নিষ্ঠুর পীড়নমূলক অমানবিক ব্যবস্থা চালানো হচ্ছে, এই ছিল সলঝেনিৎসিনের মূল প্রতিপাদ্য।
আর যোসেফ স্ট্যালিনের সর্বময় কর্তৃত্বে সেই অমানবিক নির্যাতন যন্ত্র চালু আছে। ন্যূনতম বিরোধিতাকেও লৌহকঠিন হস্তে নিঃশেষে দমনে উদ্যত স্ট্যালিনের একনায়কতন্ত্র। এই সোভিয়েত রাষ্ট্রে ব্যক্তির মতপ্রকাশের কোনো পরিসর নেই, ব্যক্তিজীবনের কোনো আড়ালকে স্বীকার করে না স্ট্যালিনের নির্মম কর্তৃত্ব। এই বক্তব্য উঠে এল গুলাগ আর্কিপেলাগো উপন্যাসের পাতায় পাতায়। ১৯৭৩ সালে তা প্রকাশ পেল। এই বইটির বৈদেশিক প্রকাশের দায়ে ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন সলঝেনিৎসিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনে ও নির্বাসন দণ্ড কার্যকর করে। অবশ্য ১৯৫৩ তেই স্ট্যালিনের প্রয়াণ ঘটে। কিন্তু স্ট্যালিনের তৈরি বজ্রকঠিন নিষ্পেষণ নীতি কায়েম থাকে। ১৯৯০ তে দিন বদলায়। সরকার সলঝেনিৎসিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা তুলে নেয়। নিরপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সলঝেনিৎসিন দেশের মাটিতে ফেরার সুযোগ পান। ১৯৯৪ সালে সাতাশ মে তারিখে সলঝেনিৎসিনের ঘরে ফেরার সুযোগ হয়েছিল। ২০০৮ সালে আজকের দিনে জীবনাবসান।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন