![]() |
ঋদেনদিক মিত্রো |
জীবনের অনেক সময় অনেক কাজে অকাজে দিয়েছেন, এখন আপনার একটু সময় আমায় ভিক্ষে দিন! আমি আপনার কাছে খাদ্য, বস্ত্র, গৃহ, টাকা, চাইছি না আপনার কাছে, একটু সময় চাইছি, আমার কোনো সেবার জন্য ও নয়, আপনার শিক্ষিত চোখ দুটিকে তৃপ্তি দেওয়ার জন্য ! এবার শুরু করছি পরপর :--
আমাকে অনেক সংস্থা থেকে মানবিক কারণে সামান্য হলেও সাহায্য চাইছেন ! এটা তাঁদের অধিকার ও বন্ধুত্ব সুলভ দাবি ! আমি দিই বা না দিই এই চাওয়ার অধিকার তাঁদের আছে ! এবং প্রমান দেখছি, তাঁরা সত্যি সাহসী সৎ সেবা কর্মী ! কোনো প্রশংসা দিয়ে তাঁদের সম্মানিত করা যায় না ! এই জাতীয় সেবা কাজে যেকোনো শ্রম ও ত্যাগ ধন্যবাদের যোগ্য মানি, তাই যে কোনো নির্ভীক সমাজ সেবীদের--- আমি একজন নাগরিক হিসেবে স্যালুট জানাই! ত্যাগের আনন্দ তাঁদের রয়েছে, তাই তাঁরা শ্রেষ্ঠ নাগরিকের দলে, ঈশ্বরের দূত হিসেবে কল্পনা করলেও ভুল হয় না ! তাঁদের এই সেবার ভাবনাকে দুরূহ কঠিন সাহসের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করা যায় ! তাঁরা কাজ করছেন দুস্থদের সেবা করার !
যে কোনো সেবায় মনকে উৎকৃষ্ট করে, শাক্তিশালী করে, বিবেচক করে, জীবনকে পবিত্র করে, জীবন বোধকে সমারোহের মতো আনন্দ দান করে, যে-সুখ ও তৃপ্তি পৃথিবীর অন্য কোনো কিছু থেকে পাওয়া যায় না ! সেটা মানুষ, বা পিপিলিকাকে সেবা করেই হোক ! একটি গাছকে যত্ন করেই হোক ! জগৎ জাগরণের মধ্যে কেউ ভেসে না গেলে সে সেবক হতে পারে না ! সেই জাগরণে তাঁরা জাগরিত, আমি তাঁদের পায়ে অশ্রু ফেলে নমস্কার করি ! যদিও সমাজ বিজ্ঞান এর নিয়মে বা পৃথিবীকে সুস্থ করে তোলার নিয়মে কিছু প্রশ্ন উত্তর চলে আসে ! যেমন,
(1) যাদের দুস্থ বলে বলা হচ্ছে, তাদেরদুস্থতা কিসে ও কেনো ! তারা যা পায় সব খেয়ে ফেলে, আমি চোখের সামনে দেখছি, তারা লুচি ছক্কা মাছ মাংস ঠুসে খাচ্ছে এই লক ডাউন এ ! লক ডাউন এর পরিস্তিতি টা কতদূর যেতে পারে সেটা অনুভব করেও তারা হিসেবের মধ্যে চলছে না ! খাচ্ছে রাজার মতো এই বিপন্নতায়, সেজে আছে দুস্থ ! পৃথিবীর সব নাগরিক সবাই সমান অধিকারে খাবে, কিন্তু পরিস্তিতি বুঝবে না, শুধু খাওয়া নিয়ে থাকবে, তাদেরকে ফুর্তি জোগাতে গিয়ে কেনো আর এক পক্ষ অন্যদের অনুরোধ বা ভিক্ষা করে টাকা এনে মড়ক রোগের সময় পথে নেমে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দান এর কাজ করবে !
(2) সেই দুস্থ ই সাহায্য পাবার যোগ্য যে নিজে জ্ঞান চর্চার অভাবে নিজেকে দুস্থ মনে করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী না হতে পেরে নিজেকে দুস্থ মনে করে ! পেটের খাবারের জন্য নিজেদের দুস্থ মনে করে তারা -- যারা স্থূল চাহিদার লোভী, তারা যেখানে যখন পাবে সেই দিকে আদর্শ হারিয়ে সমর্থনে কথা বলবে, এবং আগের উপকারীদের ভুলে যাবে ও যায় ! এটা স্থূল ক্ষুধা সম্পন্ন মানুষ দের চরিত্র !
(3) ওরা যদি ওদের খাদ্যের অধিকার নিয়ে ব্যাস্ত ও অনিবার্য প্রয়োজন, তাহলে ওদের খাদ্য সরকারী তরফে এসে কী ভাবে নানা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক প্রতিনিধি দের দ্বারা লুন্ঠিত হচ্ছে, সেখানে গিয়ে রুখে দাঁড়াক, একজোট হয়ে প্রতিবাদ কারে আগুন জ্বালাক , তচনচ করে দিক সব, সেটা করবে না, কেবল কেবল কারা টাকা পয়সা খাবার বস্ত্র চেয়ে এনে ওদের দেবে, সেখানে গিয়ে লাইন দেবে !যারা তাদের নামে আশা খাদ্য ব্যাস্ত ঔষধ লুন্ঠিত হচ্ছে জেনেও চুপ থাকে তাদের তো খাদ্য, বস্ত্র, ঔষধ ও বাসস্থান এর দরকার নেই ! তাই তারা নিরব ! কেউ বলতে পারেন তাঁরা জানে না, -- তারা যা জানে সেটা আপনার চেয়ে বেশি, তাই তারা দুস্থ সেজে আপনাকে আবেগে ডুবিয়ে আপনাকে দিয়ে ভিক্ষে করিতে আপনার থেকে সেই গুলি নিয়ে পালায়!
সেটাকে যদি বলা হয়, দুস্থ কে সেবা করা, তাহলে এর চেয়ে ভুল ব্যাখ্যা আর কী থাকতে পারে !
(5) এরা রেশন পায়, সব পায়, যারা পায় না তারাও নানা উপায়ে অর্থ অর্জন করে, এরা আবার দান চাইছে কোন ভিত্তিতে ! যদি কারোর সেটা ও না থাকে তবে তারা সেটার জন্য আবেদন ও বিদ্রোহ করুক !
এরা দুস্থের ছাপ নিয়ে একটি কায়দাবাজ শ্রেণী, লক ডাউন কেটে গেলে এরাই আবার অসৎ নেতা ও মালিক পক্ষের হয়ে দালালি করবে, মিছিল করবে, দাঙ্গা করবে,আপনাকে নানা কায়দায় বিপাকে ফেলবে, খৈনি শেখর খাবে, মদ গাঁজা খাবে, খাওয়াবে, জুয়া খেলবে ও খেলাবে, টিউশনি মাস্টারের টাকা ফাঁকি দিতে চাইবে, বাস্তুর সীমানা নিয়ে ও জমির আলবাঁধ নিয়ে লোকাল রাজনীতি করবে ! সুস্থ ভালো নাগরিককে যন্ত্রনায় রাখবে, বিভিন্ন বাবু পক্ষের হয়ে উদ্দেশ্য নিয়ে কৃত্তিম সুনাম বা দুর্নাম ছড়াবে, ক্লাব বানিয়ে মাস্তানির চক্র বানাবে, উৎসব এর নামে জুলুম করে চাঁদা তুলে ভুল ভাবে অর্থ খরচ করবে, পরিবেশ দূষণ করবে, স্থানীয় কোনো অপরাধকে ঢাকতে ঘুষ খাবে !
(6) যারা মানুষ জন্ম নিয়ে জ্ঞান চর্চা করেনা, এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নিয়ে ভাবতে চায় না, কেবল খাবে, গায়ে গতরে কাজ করবে, আর ফুটানি মেরে জীবন কাটাবে, এরা সভত্যার শত্রু ! এরা মূর্খ বা ডিগ্রিধারী পদাধিকারী, যেই হোক, এই ধরণের নাগরিকের দল সভ্যতার শত্রু !এরা পাড়াতে বা পথে বাজারে অসহায় পশু পাখি দের দুর্দশায় নিরব থাকে ! এরা অবৈধ মানুষ ! এরা নিয়ে যায়, এরা কি চুক্তি করে যায় যে এরাও সমাজ সেবা করবে? আপনাকে দেখে এরা সমাজ সেবা শেখে না, এরা শেখে আপনাকে প্রশংসা বা আশীর্বাদ করে বারে বারে বোকা বানাতে ! প্রতারক দের ধুর্ত হাসিখুশিকে কে যদি আপনি জনসেবা ভাবেন, তাহলে নিরাশ হতে হয় !
এই সব হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ্ অবৈধ মানুষ দের সম্পদ কেড়ে নেওয়া হোক, সব কিছু কেড়ে নেওয়া হোক, এবং চুক্তি করা হোক ---এরা কোনো উন্নত ভাবে জ্ঞান ও চিন্তা ও কর্তব্য কৃতজ্ঞতা নিয়ে বাঁচতে চায় কিনা,-- এরা শিক্ষিত অশিক্ষিত যেই হোক, চাকর অফিসার যেই হোক, --- চুক্তি ধরে সেই মতো যে যতটা প্রমান রাখবে সে ততটা সুযোগ পাবে!
(7) তবেই হবে দেশের উন্নতি ! বিশ্বের উন্নতি ! সভ্যতা বাঁচবে তখনি, যখন সভ্যতার অবৈধ জীব গুলোর ভাত কাপড় বাসস্থান এর অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে !ভারত বর্ষের সংবিধান বা বিশ্বের সংবিধান আমার বিরুদ্ধে কেস দিয়ে লাইভ ক্যামেরার সামনে আমার বিচার করুক !
আমি তচনচ করে দেবো, পৃথিবীর কোন তেপান্তরে কোন ব্যারিস্টার আছে দেখতে চাই, আসুক এগিয়ে !কিন্তু তারা হেরে গেলে তাঁদের আইনের রেজিস্ট্রেশন কান্সিল করতে হবে ! এমন মুচলেখা দিয়ে কি তাঁরা চ্যালেঞ্জ এ নামতে পাড়বেন !
আমার জীবনের যত ক্ষতি আজ পর্যন্ত, সব ওই সব অবৈধ নাগরিক রা করেছে, যারা শুধু পেটের জন্য নিজেদের দুস্থ ভাবতে পারে !মানে, যারা শুধু পেটের খাবার পাওয়া না-পাওয়ার পার্থক্য মেপে নিজেরা স্বচ্ছলতা বা দুস্থতার মান তৈরী করে ! আমার জীবনের সর্বনাশ গুলোর জন্য এই শ্রেণী দায়ী ! করোনাভাইরাস একটা সময়ের বিপদ, কিছু ওই অবৈধ শ্রেণী হলো সভ্যতাতে সব সময় বহু মুখি দুর্দশার মড়ক তৈরী করছে! এমন কী, করোনাভাইরাস এর মতো নানা মহামারী তৈরী ভাইরাস তৈরী হয় এদের জন্য, কারণ এরাই সর্বনাশ দেরকে নেতা ও ত্রাতা নির্বাচন করে !
পৃথিবীর কোনো ব্যক্তি বা সরকারী বা বেসরকারি সংস্থা যদি আমার ওপরের যুক্তিকে খন্ডন করতে পারে, আমি পৃথিবীতে অবৈধ নাগরিক হিসেবে পরিচয় নিয়ে একা বাস করবো ! এবং পৃথিবীর একমাত্র অবৈধ নাগরিক হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করবো !. এবং যারা আমাকে এই বিষয়ের ভুল প্রমান করবে, তাদের বাড়িতে আজীবন দাসত্ব করবো, সাহিত্য লেখা ছেড়ে দিয়ে ! এই অবৈধ জীব দের জন্য কোনো সাহায্য করা মানে আমি সভ্যতার বেইমানদের আরো ক্ষমতা বাড়িয়ে দিলাম,!
আমি যে ভাবে দুর্যোগ নিয়ে এগিয়ে আজ অনেক কষ্ট করে একজন প্রতিষ্টিত লেখক হয়েছি, -- এই আমি শান্তির চালাকি বার্তার বাহক হয়ে সভ্যতার বেইমানদের মহান বলে তাঁদের থেকে বা কোনো সংস্থা থেকে নড়বড়ে ভাবনা নিয়ে পুরস্কার এর শিরোপা চাইনা, কারণ আমার কাছে সব চেয়ে ভালোবাসা হলো সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা! তাই, আপনারা অনেকে একটি অভাবী শিশুকে দেখে দেখে ভাবছেন -- "আহা রে কী দুস্থ, "
আমি তখন আপনার দিকে তাকিয়ে করুন দৃষ্টিতে বলছি, -- "আহা রে আপনি জানেন না, এই দুস্থ শিশু আগামী দিনে আপনাকে সহ কত মানুষকে দুস্থ ও অসহায় করার চক্রান্ত করবে !"
আর যদি ওই শিশুর বাবা মা কে আপনি দুস্থ ভেবে দান করছেন, বলবে - বাবু কী মহান !--- কিন্তু এই বাবা-মাকে যদি এমন কোনো পথ দেন --যাতে ওরা সুস্থ উন্নত নাগরিক হিসোবে বাঁচবে, ওরা সেটা নেবে না ! ওরা সহজ নিয়মে সুবিধেবাদী হয়ে বাঁচতে চাইবে, ওর শিশুকে শিক্ষিত করিয়ে বানাবে আর এক অত্যাচারী ! এবং ওরাই ক্ষমতা পেয়ে সব চেয়ে বেশী শোষণ করবে ওদের দুরাবস্থার আত্মীয় প্রতিবেশী দের !
পৃথিবীর কোনো প্রান্তের কেউ এই কথা গুলির একটাও মিথ্যা প্রমান করতে পারবেন কি? আসুন পৃথিবীর কোন ধর্ম, কোন বাদ( ism ) আছেন এই কথা গুলির একটাও মিথ্যা প্রমান করবেন !যে ধর্ম এই কথা গুলিকে মিথ্যা প্রমান করবে আমি সেই ধর্ম গ্রহণ করবো, যে বাদ বা ism আমার এই কথা গুলিকে মিথ্যা প্রমান করবে আমি সেই বাদের বা সেই রাজনৈতিক দলের ক্যাডার হয়ে সারা জীবন কাজ করবো, সাহিত্য লেখা ছেড়ে দিয়ে !
আর, যে কেউ আপনি যদি ব্যক্তিগত ভাবে ওই যুক্তি গুলিকে মিথ্যা প্রমান করেন, তাহলে আপনার বাড়িতে কোনো কাজ করার বেতন ভুক্ত লোক লাগবে না, সেটা আমি করবো !
আসুন উৎকৃষ্ট যুক্তি ও বিবেচনা নিয়ে সবাই জেগে উঠি ! "সাহায্য " শব্দ তাই অপরাধ নয়, কিন্তু কোথায় কেনো সাহায্য করা হবে সেটা না বুঝে সাহায্য করাটা নিজের ও সমাজের ও সভ্যতার বিপন্নতা কে বাড়িয়ে দেয় না কি ! তখন আপনার করা সব মহৎ সাহসী শ্রম গুলো নিষ্ফল হয়ে যায় !
ভারত বর্ষে "দয়া " নামক শব্দটি সকল অধর্মের উৎস ! তাই এদেশে সব রকমের বর্বরতা কে বলা হয় উৎসব ! তাই ম্যানমেড বন্যা বা ইচ্ছে করে বন্যা তৈরী করা হায়, সঠিক উপায়ে বাঁধ না বেঁধে, সাহসী সত্যবাদীকে সন্ত্রাসবাদী বা রাজদ্রোহী বলা হয়, সুবিধেবাদীকে ভদ্র নাগরিক বলা হয়, পীড়ককে পদাধিকারী বলা হয়, চাটুকারকে বুদ্ধিমান বলা হয়, ধোঁকাবাজকে বিচক্ষণ বলা হয়, ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দেওয়ার বেদি গুলিকে সভা বলা হয়, সভায় আমন্ত্রিত নাটক-বক্তা দের সম্মানীয় অতিথি বলা হয়, এবং সভার সামনে নিষ্ক্রিয় বুদ্ধি সম্পন্ন অন্ধদের ভিড়কে দর্শক বলা হয়, বিষাক্ত পরিস্তিতিতে নিজের উন্নত চিন্তা চেতনার স্বাধীনতা হারিয়ে সংসার এর তৈরী সময়ের বিষকে ক্রমশ গ্রহণ করতে-করতে একটি নারী নিজেকে শেষ ও সর্বনাশ করতে থাকলে সেই নারীকে সতী গৃহ লক্ষী বলা হয়, কেউ যদি ----পুরুষ নারী যেই হোক -- সে যদি তার প্রাকৃতিক জৈবিক ইচ্ছে বা যৌন ইচ্ছেকে নিপিড়িত করে দমিয়ে রেখে নিজের শরীরে ও মনকে অসুস্থ করে দিতে পারে তাহলে তাকে সুন্দর লাজুক বলে আখ্যায়িত করা হায়, এবং যখন যা ইচ্ছে ---সেটা সমাজের অমঙ্গল হলেও তা করলে সেটাকে গণতন্ত্র বলা হয়, নিজের অগাধ অবৈধ সম্পত্তির মালিকানা বজায় রাখতে লাল পতাকা হাতে ধরলে সাম্যবাদী বলা হয়,
এবং চৌর্য বৃত্তির বিচিত্রায়ন ও বৈচিত্রায়নকে স্বাধীনতা বলা হয় ! আত্মপ্রতারণাকে সংযম বলা হয়, বিশ্বের সব দায় ভুলে স্বইচ্ছায় চোখ বুজিয়ে নিজেকে চালাকির অন্ধ বানিয়ে নিজেকে সবার চোখের আড়ালে রাখাকে যোগাসন বলা হয় সেই সাথে ভারতের ঐতিহ্য বলা হয়, শুধু নিজের আখের গোছানোকে মানবাধিকার বলা হয়, দাস বৃত্তির অভ্যেসকে সম্ভ্রম বলা হয়, দাস বৃত্তির পেশাকে চাকুরী বলা হয়, আনাড়ি দাঙ্গা করাকে বিক্রম বলা হয়, অলস শোষক পরিচিতিকে সেবা করাকে আতিথেয়তা বা দেব-সেবা বলা হয়, চরম দুস্থ কে এক মুঠো ভিক্ষা অবহেলার সাথে দান করে ঈশ্বরের কাছে যাবার পথ তৈরী করা হয়, সবচেয়ে দিশাহারা চাটুকার দের বুদ্ধিজীবী বলা হয়, কৃত্তিম রঙ মেখে নিজের মনুষ্য রূপকে পুতুলের রূপ দেওয়া হলে তাকে সেলিব্রিটি বলা হয়, বেপরোয়া বর্বর দুস্টু ছাত্রকে প্রখর বুদ্ধিমানছাত্র বলা হয়, পারস্পরিক কার কত সম্পত্তি ও পদ ডিগ্রী আছে সেই অনুযায়ী একটি নারী ও পুরুষের মন মনন হীন স্থায়ী যৌনতার সম্পর্ককে সামাজিক ভাবে তকমা দেওয়াকে পবিত্র বিবাহ বলা হয়, এবং বুদ্ধিহীন চেতনা হীন হল্লাবাজিকে অনুষ্ঠান বলা হয়, বারো মাসে তেরো পাবন এর নামে বিচিত্র পাগলামিকে সামাজিক শাস্ত্রীয় গৌরব বলা হয়, এবং সুবিধেবাদী জ্ঞানীকে পন্ডিত বলা হয়, প্রতিবাদী জ্ঞানীকে অপরাধী বলা হয়, মূলত এর নাম তো ভারত বর্ষ !
কেউ বলবেন তাহলে বিবেকানন্দ নিবেদিতা তো দরিদ্রের সেবা করেছেন, সে জন্যই তাঁরা জীবনকে উৎসর্গ করেছেন !. বিবেকানন্দ-মহান ত্যাগী ছিলেন, কিন্তু দর্শনে ভুল ছিলো ! তাই তাঁরা খেয়াল করেন নি যে, তাঁদের দ্বারা গণশিক্ষা, নারীশিক্ষা, দরিদ্রসেবা র কাজ গুলি সমাজে আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থপর পরিবারের সংখ্যা বাড়াবে ! কারণ, কারণ জনগনের মুক্ত চেতনার বৈশিষ্ঠ বাড়ানোর পদ্ধতি না তৈরী করলে, সমস্ত জীবের প্রতি সমান দায়িত্ব পালনের উপলব্ধি ও প্রবণতা না তৈরী করলে, সব রকম শিক্ষাদান ও সেবা কার্য নিষ্ফল হয়! তাঁদের মতো পৃথিবীর বহু মহানদের চিন্তা ও কর্মের প্রতি একতরফা বিশ্বাস রেখে বর্তমান সময়ের নাগরিক গন যে-সেবা কার্য চালাচ্ছেন, তার ফলাফল ও একই হচ্ছে ! সভত্যার দুর্গতি আরো আরো বেড়ে যাচ্ছে, কমবার প্রশ্ন ই ওঠে না !
বিবেকানন্দ ও নিবেদিতা দের মতো মানুষদের জ্ঞান ও মহত্যকে কোনো তুলনায় আনা যায় না মানি, কিন্তু, বড় খেলোয়াড়ও যখন গোল দিতে গিয়ে গোল দিতে পারেনা, তখন তাকে বড় খেলোয়াড় বিফল হলেন --- এটাই বলা হয় ! বিবেকানন্দ বলেছেন, বিবেক বুদ্ধি জাগায় যে-শিক্ষা সেটাই শিক্ষা, এই জাতীয় কথা, এই ভাবে তিনি শিক্ষার উদ্দেশ্য কে মূলত মানুষ মানুষের জন্য -- এই রকম সীমাবদ্ধ বেড়াজালে ঢুকিয়ে রাখলেন ! অনেক পয়েন্ট আছে, আর একটা পয়েন্ট দিচ্ছি ! উনি মানুষকে পাপ পুণ্যের লোভ দেখিয়ে ত্যাগী করাতে চেয়েছেন, তাই বলেছেন,
" জীব প্রেম করে যেই জন,
সেই জন সেবিছে ঈশ্বর !"
এই কথার চেয়ে সর্বনাশ ভাইরাস পৃথিবীতে আর নেই ! এই মানে উপলব্ধি থেকে একটা মানুষ কোনো জীবকে ভালোবাসবে না, ঈশ্বর নামক কাউকে খুশি করার জন্য একটা মানুষ জীবকে ভালোবাসবে ! এখানে প্রশ্ন, ভালোবাসা জিনিস টা কি নিজের অনুভূতির স্বাভাবিক তৃপ্তির জন্য, নাকি থার্ড পারসন কে খুশি করার জন্য আসে !এই যে বাবুকে খুশি করার জন্য কাউকে দরদ দেখাবো, এই ভুল আত্মিক বোধএর জন্ম দিয়েছেন হাজার হাজার বছর ধরে ওই জাতীয় মহান বা দেবদূত গন, কিংবা যাঁরা মানব দেহ নিয়ে ঈশ্বর বলে পরিচিতি -- তাঁরা ! অন্য কাউকে খুশি করতে আমি কাউকে দরদ দেখাবো, এই থেকে তৈরী হলো চাটুকারিতা স্বভাব এর উৎপত্তি, যেটা মানব সমাজে ভাইরাস হয়ে ঢুকে গেছে, তার ফলাফল ক্রমশ পৃথিবীর
বিপন্নতা !
দেখুন সব সর্বনাশের মুলে কিন্তু এই চাটুকারিতা , পরিবারের ভিতর, প্রতিবেশীর ভিতর, রাজনীতির ভিতর, শিল্প সংস্কৃতির ভিতর, কর্মক্ষেত্রের ভিতর, রাষ্ট্রে -রাষ্ট্রে সম্পর্কের ভিতর ! মানে আমি আমার অন্তরকে কি খুশি করবে সেটা ভাববো না, আমার চেয়ে ক্ষমতাবানকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমি ব্রতী হবো ! এই বোকা অনুভূতির দ্বারা পরিচালিত হতে থাকলো সারা বিশ্ব সমাজ! তার একটি সামান্য ফল কোরোনা ভাইরাস ! চাটুকার বিজ্ঞানী তারচে ক্ষমতাবান কে খুশি করতে এটা তৈরী করেছেন, আবার সেই ক্ষমতাবান নেতারা অন্য দেশের নেতা ও জনগণকে চাটুকার বানাতে এটা ব্যবহার করবে !
বিবেকানন্দ বলেছেন যে নিজেকে যে বিশ্বাস করেনা সে নাস্তিক ! এই কথার পাশাপাশি যখন তিনি বলছেন ঈশ্বর নামক কোনো ভয়ঙ্করকে খুশি করতে মনের ইচ্ছে না থাকলেও তুমি অসহায় জীবে দরদ দেখাও, সেটাই প্রেম, তখন এই ভাবনা তীব্র দ্বিচারিতা করে !আমি কিন্তু বিবেকানন্দ -নিবেদিতাকে আনলাম এই জন্য যে এই দুজনের সম্মন্ধে সবাই কমবেশি জানেন ! তাই এঁদের উদাহরণ করে হাজার হাজার বছরের মহান দের করা অনিচ্ছাকৃত বিশেষ ভুল গুলিকে দেখালাম, পুরো ভাবনার প্রথাকে সচ্ছতা দেবার জন্য ! হতে পারে তাঁরা নানা চাপ ও ঝামেলায় বিপন্ন হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁদের ভুল টা তো ভুল ই !
🖐️
( এই লেখার বিরুদ্ধে যে কোনো যুক্তি গ্রাহ্য আলোচনা প্রত্যাশী )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন