শঙ্খলাগা শহর : গোবিন্দ ধর

গোবিন্দ ধর

শঙ্খলাগা শহর

গোবিন্দ ধর 


 এই শহরে একজনই গোবিন্দ মাণিকা।
যে পদ্মশ্রী উপাধি ভূষিত।
এই শহরে একজনই পদ্মশ্রী
যার গোবিন্দে আরোগ্য হয়েছে।


বুকের ভেতর জলের ভেতর থেকে জলকাতর হয়ে একটু একটু মাইলস্টোন অতিক্রম করতে হয়। উপক্রমণিকার সিঁড়িগুলো না টপকে শর্টকাট কোন স্বর্গপথ নেই। সে বিষয় না জেনেই হাওয়ায় শব্দ ভাসান সদ্য গোঁফেয়ালারা। আমার শহরকে রাজধানী বলে না। আমার শহরকে জেলা সদরও নয়। আমার শহর আসলে শহর ছিলো না। নিতান্ত গ্রামপঞ্চায়েত। হাততোলা ভোট দেখে বড় হয় শহর। গাইবাছুরে ভোট দিয়ে জোড়ানৌকো থেকে সেতু হলো দেওনদী পারের শহর।তারপর ৭৮। নৃপেন চক্রবর্তী হয়ে এই শহর নগর হলো। দশরথ হয়ে মানিকে এসে নগর হলো পুর পরিষদ। 

এ শহর রাজধানী প্রিয়তা পায়নি। এ শহর সে আকুলতা নির্ভরও নয়। এ শহরের প্রতিটি পথ আধুনিক বিশ্বের সড়ক মেরামতিতে রিপেয়ার হয়নি। এ শহর থেকে পায়ে হেঁটে দারচৈ দারুচিনি দ্বীপের স্বপ্ন আঁকে চোখ। চোখের মণি বেরিয়ে আসে বিবাহবার্ষিকীর আগেই। এই শহর থেকে পুবে চোখ তুলে তাকালে কমলালেবুর মতো সূর্য উদয় দেখা যায়। পশ্চিমে ধলাই কালোটিলা।দক্ষিণ বরাবর লংতরাই শাখানটাং থেকে কচি টেঁকিশাক ভর্তি খারাঙ নেচে নেচে পাহাড়ি রমণীর পিঠ দোলে উঠে। উত্তরে নটিংছড়া চা বাগান পেরিয়ে গেলে ঊনকোটি।মনুভ্যালি চা বিশ্ববাজার দখল করলেও আমাদের আনারস দারচৈ পেরোয়নি। নেই নেই  করেও আমাদের দুটি নদী আছে। চটি লাঠি পুঁটি আমাদের প্রিয় মাছ। নদী চরে লাউডগা লকলক করে বেড়ে উঠলে আমাদের কৃষক নবান্নের গান করে।

আমাদের শহরের নেতাজী সুভাস চৌমুহনী হয়ে গ্রাম থেকে উঠে আসে একটি আওয়াজ।কেউ কেউ আওয়াজে আওয়াজ তুলে কিছুদিন বৈঠকী কবিতা পাঠে মিলিত হতেন।বছর দুয়েক পর আওয়াজ এসে থেমে যায় সূর্যসেন লেইন।কিছুদিন  প্রলাপ চলে।তারপর মে'বিকেলে দেওনদী পেরিয়ে আওয়াজ এসে কোলাহলে মিশে গেলো। রাজধরের আত্নহত্যার পর গোবিন্দ মাণিক্য আরো তেজস্ক্রিয় এখন। আমাদের শহরে কবিদাদা নেই। আমাদের শহরের কবিদাদারা দাদাগিরি করতে এসে পটল উঠে গেলো। আমাদের শহরে শঙ্খপল্লব আদিত্য বসবাস করেন না। আমাদের শহর সুবোধ VS সুবোধকে জানে।এই শহরে বিজ্ঞানের বীজতলায় বিজ্ঞান চাষ হতে হতে শনিতলার সংখ্যা রাজধানীর মতো ধানিজমি।

তাও হাহুতাশ নেই। ফুটবলে লাথি দিলে এ শহরের বল দেওজলে ভেসে যায়। জলপ্রপাতের কাছাকাছি তাও পা ডুবিয়ে ভাসমান বল তুলে আনতে এগিয়ে এলো না সিকামনুকতাই। আমাদের নেই অনুপ দুলাল কিশোর দেবব্রত শ্যামল। আমাদের নেই দিলীপ রামেশ্বর।আমাদের শহর তাতে কিচ্ছু ভাবে না।
আমাদের শহরের দাদা চাই না। এ শহর থেকে দেওনদীসমগ্র দেওজল বাহিত মনুতেই শঙ্খ লাগে।

১৩:০৫:২০২০
সকাল:০৮:১৫মি
কুমারঘাট।
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.