![]() |
বাঙালি আজ একাই ১ Show :- পিনাকী চৌধুরী |
প্রথমেই বলে রাখি, একশো বাঙালি আজও এক হতে পারে নি , কিন্তু বাঙালি আজ একাই ১ Show ! দিনের শুভ সূচনায় বাঙালি বেশ চনমনে অনুভব করে ! আর তারপর বেলা যতোই গড়ায় , ততই যেন বাঙালি পরশ্রীকাতর হয়ে ওঠে ! থুড়ি, ভুল বললাম ! অতীতে বাঙালির যেমন একটা আদর্শনিষ্ঠ জীবন যাপন ছিল , ঠিক তেমনই ছিল পরশ্রীকাতরতা ! আর এখন ? বলাইবাহুল্য যে, সেটা হয়ে গেছে ' পরস্ত্রীকাতরতা'! হ্যাঁ, বাঙালির নিজের বউটা কেমন যেন ! অপরের বউটি যেন বিশ্বসুন্দরী ! বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, আজও বাঙালির খাটের তলা থেকে উঁকি মারে মান্ধাতা আমলের ঝাড়ু ! আর বাঙালির মতো সুগায়ক বা সুগায়িকা ভুভারতে নেই ! হ্যাঁ, প্রত্যেক বাঙালি কিন্তু আজও এক একজন বিশিষ্ট' বাথরুম সিঙ্গার'!
এই একবিংশ শতাব্দীর চরম ব্যস্ততার যুগেও বাঙালি কিন্তু আজও বেশ রসেবসে বেঁচে থাকতে পছন্দ করেন ! বিশেষ করে হোয়াটস অ্যাপ ইউনিভার্সিটিতে ! বাজার করতে গিয়ে মাছের পেট টিপে বাঙালি অবলীলায় বলে দিতে পারে যে, মাছটি অন্ধ্রপ্রদেশের চালানি মাছ ! আর সন্ধ্যা ঘনালেই বাঙালি বাড়ির টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলের দখল চলে যায় প্রমীলা বাহিনীর হাতে ! তবে রেগে গেলে কিন্তু বাঙালি পুরুষ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে ! বাস্তবে মূলত গভীর হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে বাঙালি পুরুষ রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে অপরকে যা নয় তাই বলে দেয়! এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলি, অতীতের মতো আজও বাঙালির কিছু সুন্দর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বিরাজমান ! হ্যাঁ, শিক্ষার প্রতি অনুরাগ, সহমর্মিতা , পরানুভবতা ইত্যাদি ইত্যাদি!
তবে অতীতের মতো আজও বয়ঃসন্ধিকালে বাঙালি কিশোরটির পাঠ্য বইয়ের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারে চটি বই ! তবে আজও বাঙালি চৈত্র সেলের বাজারে গিয়ে জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তবে চৈত্র সেলের বাজারে যে ছাড় বা ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়, তা যেন অনেকটাই মাছের তেলে মাছ ভাজার মতন ! কেন বললাম কথাটা ? হ্যাঁ, দোকানদাররা সুকৌশলে , গোপনে দামটা প্রায় চল্লিশ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়ে , বড় হরফে লিখে দেয় '৩০% ডিসকাউন্ট' চলেছে ! বাঙালি মানেই যেন আজও প্রাণখোলা অমায়িক হাসি ! বাঙালি মানেই তো আজও অফিসের বড়বাবুকে চরম তোষামোদ করে কর্ম জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়া! বাঙালি মানেই যেন আজও প্রথম যৌবনে পাশের বাড়ির মেয়ের প্রেমে পড়া ! আর হ্যাঁ, বাঙালি কিন্তু আজও রবিবাসরীয় খবরের কাগজে যতোটা না খবর পড়ে, তার থেকেও ঢেড় বেশি গেলে সাপ্তাহিক রাশিফল !
আজকাল বাঙালি হাসতে ভুলে গেছে, সম্ভবতঃ সেই কারণেই শহরের আনাচে কানাচে লাফিং ক্লাবের গুরুত্ব বেড়েছে ! কিন্তু মুশকিলটা হল, একইসঙ্গে বাঙালির অপরের ওপর হাসার প্রবণতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে ! হ্যাঁ, অপরকে হেয় জ্ঞান প্রতিপন্ন করে বাঙালি স্বর্গ সুখ অনুভব করে ! আজ বলতে দ্বিধা নেই যে, স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে আজও বাঙালি হয়তোবা কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক ! আর সেই আত্মকেন্দ্রিকতা প্রসূত দুর্বলতার বীজটি বৃদ্ধি পেয়ে বাঙালিকে শোচনীয় পদস্খলনের দিকে ঠেলে দিয়েছে ! হ্যাঁ, একশো বাঙালি আজও এক হতে পারে নি , কিন্তু বাঙালি আজ একাই ১ Show !
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন