![]() |
কিশলয় গুপ্ত'এর একগুচ্ছ কবিতা |
বাউলানা_৩৫
সিম্ফনি- কোলবালিশ
ঈর্ষা ঘর- বুট পালিশ
রাতচরা দৃষ্টিদের স্মৃতি কোন
বন্ধু শোন।
রাত শিশির- প্রেম নিকেল
চারশো বিশ- শেষ বিকেল
দিন গোনা কল্পনার স্মার্ট ফোন
বন্ধু শোন।
বন্ধু শোন- এই মাটি
হোক কাদা চর হাঁটি
পা ভিজুক অসুখে
তোর বুকে তমশুকে।
আরশোলা- লাফ দেয়া
পাপ বোধে সব খেয়া
দুঃসহ এই সময়ের কারণ
বন্ধু শোন।
সিম্ফনি- ঈর্ষা ঘর
হাত নাড়ে জলসাঘর
ফোন জুড়ে স্মৃতিদের রিং টোন
বন্ধু শোন।
৩৬
কিছু কষ্ট তোলা থাক-
স্বভাব দোষে চেনা রাস্তার মোড় ঘুরে গেলে
জমানো কষ্ট থেকে কিছুটা খরচ করা যাবে।
অতঃপর পথের ধাবায় খাটিয়া জুড়ে
তড়কা লাগিয়ে রাতের খাবার সমাপন।
"ইহারে প্রমোদ ভ্রমণ বলা চলে না"
এবং সুখ গড়িয়ে যাক রাস্তায়
ধূলো কাদায় মাখামাখি হাওয়াই চপ্পল নাচে
সাধু ভাষায় ধোয়া তাপ্পি জোব্বা।
গ্রাম চলে যায় বহুদূরে
পাড়াতুতো আত্মীয়রা ব্যস্ততার গভীরে বন্দী
স্বভাব দোষে সম্পর্কগুলো অচেনা হয়ে যায়।
কিছু কষ্ট তোলা থাক-
আঁধার দেখে ভেবে চিন্তে খরচ করা যাবে।
৩৭
নামতে থাকো- নামতে থাকো- নামো
মেদ ঝরাতে একটু আধটু ঘামো
দাম বাড়াতে বন্ধ ফড়ে বাজার
কৃষ্ণ ব্যাটা হাওয়া এবং রামও
নামতে থাকো- নামতে থাকো- নীচে
হাজার আত্মা নামছে তোমার পিছে
চলকে পড়ে শুভ সকালের চা
দাগ লেগে যায় প্রিয়তম পিরীচে
নামতে থাকো- নামতে থাকো- মাটি
ঘাম ঝরাতে এক পা দু'পা হাঁটি
লাঠির জন্য ঝগড়াঝাঁটি এত
পায়ের নীচে রাস্তা হাতে বাটি।
নামতে থাকো- নামতে থাকো- তলে
আরও নামো আরও গভীর জলে
নামতে নামতে রক্ত মাংস হাওয়া
তবুও নামো কবি কিশলয় বলে।
৩৮
যাপনের গভীরে রাত বেড়ে যায় হাঁটা পথে
আঁধারের সুযোগে চর জাগে বিছানায়
কানের ওপাড়ে গোপনে ওৎ পাতে চর
পায়ে পায়ে অপরাধ বড় হয় তবু
ইতিহাস বেড়ে ওঠার শর্ত আমাদের হাতে নেই।
পিছন ফিরে থাকে জলজ সম্পর্কগুলো
সুবিধাবাদী জানালার পর্দা দোল খায়
আধুনিক বাতাসে একমাত্র স্নেহের দোহাই
জলচর প্রানীরা স্নান জানে না
ঢেউয়ের আড়ালে অলীক সংসার খোঁজে।
সুর বাঁধা সারা হলে বেলা মেপে এসো
নতুন কথাদের নেড়েচেড়ে বসাবো বুকে,
বুকে বুকে ছড়িয়ে পড়ুক বালিশের কষ্ট
শর্ত মেনে যাপন হামাগুড়ি দেয় নজরে।
৩৯
আমাকে পোড়াতে পারে-
তেমন আগুনের সন্ধান পেলে জানিও
আমাকে ভেজাতে পারে-
তেমন জলের খবর আছে কোথাও?
আমাকে ভাসাতে পারে-
তেমন স্রোতের ঠিকানা আছে কারো কাছে?
চল্লিশ কোটি ভাই বোনের মধ্যে
একমাত্র আমারই চামড়ার বয়স চল্লিশ
আমাকে বার্ধক্যে নিতে পারে
তেমন সময়ের ইঙ্গিত পেলে বলে ফ্যালো
আমাকে কাঁদাতে পারে
তেমন কোন কষ্ট থাকলে নিয়ে এসো
শিরদাঁড়ায় বেঁধে রেখেছি বাঁচার গোপন রহস্য।
৪০
জন্ম নিচ্ছে- আর মরে যাচ্ছে
এক মুহুর্তে মানুষের বাচ্চারা
বেঁচে থাকছে হাত,পা, চোখ, মুখ
রক্ত দৌড়াচ্ছে, বুকের ধুকপুকানি
হৃৎপিন্ড ভাড়া খাটছে মরার হয়ে
শিরদাঁড়া খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বলিরেখা পড়া পর্যন্ত নতজানু
ঘাড় গোঁজা ঘুম, পাতানো সম্পর্ক
খেলা খেলা প্রেম ইত্যাদি ইত্যাদি
এবং ইত্যাদির পংক্তিতে দাঁড়িয়ে থাকা।
জন্ম নিচ্ছে- আর মরে যাচ্ছে
এক মুহুর্তে মানুষের বাচ্চারা।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন