![]() |
গোবিন্দ ধর |
গান সৃষ্টির এক আনন্দময় উপহার। আমাদের মনের যন্ত্রণা,দূঃখ কষ্ট প্রকাশের মাধ্যম।লাঘবের মাধ্যম।গানকে মানুষ সহজে গ্রহণ করেন।
ভাওয়াইয়া মূলত বাংলাদেশের রংপুর এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে ও আসামের গোয়ালপাড়ায় প্রচলিত এক প্রকার পল্লীগীতি। ভাওয়াইয়া গানের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এসকল গানগুলোতে স্থানীয় সংস্কৃতি, জনপদের জীবনযাত্রা, তাদের কর্মক্ষেত্র, পারিবারিক ঘটনাবলী ইত্যাদির সার্থক প্রয়োগ ঘটে।ভাওয়াইয়া গান তাই মানুষের গান।জনসাধারণের গান।জনগণের না বলা প্রতিবাদ,প্রেম ভালোবাসাই এই সকল গানের মধ্য দিয়ে মানুষের মনের অভিলাস পূরণে সার্থক ভূমিকা নেয়।গান তো মূলত মানুষের মনের সূক্ষ্মতি সূক্ষ্ম গ্রন্থিগুলোতে অনুরণন তৈরী করে শ্রোতাদেরকেও আবিষ্ঠ করার মাধ্যম।ভাওয়াইয়া এত জনপ্রিয় সেজন্যই।ভারতের আসামের গোয়ালপাড়ার একটি বিখ্যাত গান ছোটবেলা থেকে শুনতে শুনতে কখন বড় হয়ে গেলাম ঢেরই পাইনি।
"কোন দিন আসিবে বন্ধু কইয়া যসও কইয়া যাওরে।
বন্ধু যদি যাইবার চাওঘাঢ়ের গামছা থইয়া যাওরে।"
আবার
"একবার গেলে কি আসিবে বন্ধু
মোর মাহুত বন্ধুরে"
এখনো এই সময়ের গান মনে হয়।মনে হয় মাহুত চলে যাওয়ার আগে তার প্রিয়তমার মনের প্রেম বিরহের এই গান।
উত্তরবাংলার খ্যাতনামা ভাওয়াইয়া শিল্পী, বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমীর পরিচালক, ভাওয়াইয়া ভাস্কর ভূপতি ভূষণ বর্মা ভারতের দেয়া সঙ্গীত চুড়ামনি পদকে ভুষিত হয়েছেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার বারোকোদালী ভাওয়াইয়া সঙ্গীত একাডেমী আয়োজিত পূষূণা উৎসব ও সোনারায় পূজা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁকে এ পদক দেওয়া হয়। আয়োজক কমিটি ভাওয়াইয়া গানে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের এই প্রখ্যাত ভাওয়াইয়া শিল্পীকে ‘সঙ্গীত চুড়ামনি পদকে ভুষিত করেন।
জানা গেছে, ভূপতভূষণ বর্মা এ পদকসহ দেশে ও ভারতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ৩২টি সম্মাননা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন।
ভূপতিভূষণ সত্যি সত্যি নিদানকলের বন্ধব।তাঁর মরমীয়া গান আমাদের প্রতিমা বড়ুয়ার মতো মানুষের মনে ছাপ রাখুক।রংপুর গোয়ালপাড়া ছাড়াও আজ ভাওয়াইয়া গান মানুষের মুখে মুখেও প্রচলিত।ভাওয়াইয়া-ভাস্কর ভূপতিভূষণ বর্মা আমাদের প্রিয়জন হয়ে বেঁচে থাকবেন মননে ও হৃদয়ে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন