মাতৃ দিবস
পিনাকী চৌধুরী
'মা' এই ছোট্ট শব্দটির বোধহয় কোনো বিকল্প নেই! বাস্তবে মা মানেই যেন এক পরম ভরসার জায়গা! পরম আদরেরও বটে! আর মায়ের অপত্য স্নেহ লাভ করতে কার না মন চায়! বস্তুতঃ আমারও অর্ধেক আকাশ জুড়ে রয়েছে মায়ের অবদান! খুব কাছ থেকে দেখেছি কিভাবে সংসারের হাজারো ঝক্কি ঝামেলা সামলে মুখে এক অমায়িক হাসি দিয়ে আমাদের ভুলিয়ে রাখতে! আরও দেখেছি কিভাবে সেই মা একধারে কোমল এবং অন্যধারে ইস্পাত কঠিন বজ্র আঁটুনি দিয়ে সন্তানকে লালন করেছেন! হ্যাঁ এখনও.... ! বস্তুত সেই মা যেন সর্বংসহা ধরিত্রীর মতোই হাসি মুখে সবকিছু মেনে নিয়ে আজও আমাকে বলেন " বাবা, মনের মতো কিছু হয় না, হয় তুমি মেনে নাও, কিম্বা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নাও !"
ছোট থেকেই লক্ষ করেছি, কিভাবে দিনের পর দিন রাতে নিজে না খেয়ে অবলীলায় সেই খাবার আমার পাতে তুলে দিতে ! " তুমি খাবেনা মা ?" জিজ্ঞাসা করলেই মা ম্লান হেসে উত্তর দেন " আমার আজ খিদে নেই রে ! " হ্যা , সেই মা, যিনি কিনা একরাশ অভিমান নিয়ে আমাকে একদিন আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন " সারাজীবনই তো আমি পরমুখাপেক্ষী হয়ে রয়ে গেলাম ! আমিতো তোর বাবার বা তোর ওপরে উঠতে পারলামনা "! হ্যাঁ, আজ মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার ! মানে মাতৃ দিবস। আর বিশ্ব মাতৃ দিবস কিন্তু প্রথম শুরু হয়েছিল আমিরিকায় ! সেখানকার আনা জার্ভিস ছিলেন একজন মাতৃভক্ত। নিজের মা'কে তিনি খুব ভালোবাসতেন এবং শ্রদ্ধা করতেন !
![]() |
পিনাকী চৌধুরী |
এই আনা জার্ভিস কখনও বিয়ে করেননি ।তাই তিনি মায়ের মৃত্যুর পরে নিজের মা'কে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এই বিশেষ দিনটির প্রচলন শুরু করেন। ১৯০৫ সাল নাগাদ মাতৃ দিবসকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্যে লড়াই শুরু করেন। যদিও শুরুর দিকে মার্কিন কংগ্রেস এই প্রস্তাব খারিজ করে দেয় ! কিন্তু অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ! ১৯১৪ সালের ৯ মে তদানীন্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন একটি আইন পাশ করলেন,আর তাতেই সুস্পষ্টভাবে বলা হয়, মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার এই বিশ্ব মাতৃ দিবস পালন করা হবে ! সেইথেকে আমেরিকা সহ বিশ্বের বহু দেশে এবং অবশ্য ভারতে এই মাতৃ দিবস পালন করা হয়! মা তুঝে সেলাম !
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন