বিভাগ: প্রবন্ধ : ঈদারুল ইসলাম

বিভাগ: প্রবন্ধ : ঈদারুল ইসলাম
বিভাগ: প্রবন্ধ : ঈদারুল ইসলাম

"বর্তমান সময়ের নিরিখে শিশুরা কি যন্ত্র নির্ভর হয়ে পড়ছে,না কি আমরাই ওদের হাতে এই মারণাস্ত্র তুলে দিচ্ছি?"
--- ওদের শৈশব কি কোনোভাবে নষ্ট করা হচ্ছে?

এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে একটু আলোকপাত করা যাক-

শিশুর শৈশব হবে সম্পূর্ণ চাপ মুক্ত। সেই সাথে মুক্ত বাতায়নে অবলীলায় শ্বাস নেয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ চাই। চাই বোঝা বিহীন সহজ সরল জীবন।

কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বর্তমানে শিশুদের জন্য কি সেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ অক্ষুণ্ন রয়েছে ? প্রশ্ন অনেক, কিন্তু উত্তর কোথায় ! কে দেবে সেই উত্তর ?

বর্তমান সময়ের নিরিখে দেখলে দেখা যায় যে,শিশুর শৈশবকে আমরাই যন্ত্র নির্ভর করে তুলছি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ওরা প্রায় ভুলেই যাচ্ছে। ক্রমান্বয়ে আমরাই ওদের যন্ত্র নির্ভর করে তুলছি। বোধ হতে না হতেই আমরাই ওদের হাতে খেলনার পরিবর্তে তুলে দিচ্ছি টিভির রিমোট কন্ট্রোলার, মুঠো ফোন ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, প্রভৃতি মারণাস্ত্র। হ্যাঁ, "মারণাস্ত্র" বলছি; কারণ এই সকল ইলেকট্রনিক গ্যাজেট থেকে যে রেডিয়েশন হয় তা শিশুর মস্তিষ্কের উপর ভীষণ ভাবে প্রভাব ফেলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে,কর্মব্যস্ততার কারণে আমরা শিশু মনকে ডাইভার্ট করার লক্ষ্যে ওদের হাতে এই সব ইলেকট্রনিক গ্যাজেট তুলে দিয়ে খানিকটা চাপমুক্ত ভাবে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

ফলশ্রুতিতে ওরাও ওই যন্ত্র নির্ভর জীবনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। টেলিভিশন চ্যানেলে বিভিন্ন কার্টুন দেখে দেখে ওদের শিশু মনে তার একটা প্রভাব পড়তে থাকে এবং একটা সময় আসে যখন ইউটিউব বা অন্য কোনো মাধ্যমে সম্প্রচারিত এই সকল কার্টুন/ভিডিও গ্রাফিক ইফেক্ট, প্রভৃতি শিশু মনকে ক্রমশঃ গ্রাস করে চলে। এর ফলে সুস্থ সামাজিক পরিবেশ থেকে ওরা ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। সামাজিক এবং নৈতিক মূল্যবোধ গুলো দিনে দিনে লোপ পেতে থাকে,সেই সাথে মানসিক অবস্থারও পরিবর্তন ঘটে চলে।

মাত্রাতিরিক্ত যন্ত্র নির্ভর হওয়ায় স্নায়ুকোষ গুলো ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে দৃষ্টিশক্তি লোপ পেতে থাকে; ফলে ওদের উপর অতিরিক্ত বোঝা হিসেবে মোটা গ্লাসের চশমা চাপিয়ে দিতে বাধ্য হতে হয়। এ ছাড়াও মানসিক অবসাদ ও মাথার যন্ত্রণা তো লেগেই থাকে।
উন্মুক্ত পরিবেশে খেলাধুলা না করায় অর্থাৎ কায়িক পরিশ্রম কম হওয়ায় স্থূলতা বৃদ্ধি পায়,যা গোটা বিশ্বের কাছে একটা ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

না,এগুলো কোনো মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নয়। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের অভিজ্ঞতা এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই বলছি। যেহেতু শিশু মন আমার সবচাইতে বেশি প্রিয় বিষয়,বলতে গেলে বীক্ষণাগার; তাই এই শিশু মনে বেড়ে ওঠা সমস্যাগুলো সহজেই উপলব্ধি করতে পারি। বলতে গেলে আজকের শৈশব আমায় ভীষণভাবে ভাবিয়ে তুলেছে !!!!
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.