![]() |
রুমির যুদ্ধ : মৃদুল শ্রীমানী |
"কি আশ্চর্য, আমার জিনিস আমাকে দেবেন না আপনি?" পোস্ট অফিসের পিওনটিকে একটু শক্ত গলাতেই বলল রুমি।
"না, দেব না। বলছেন যে এটা আপনার শ্বশুরবাড়ি। তাহলে এদের পদবি আপনি লেখেন না কেন?"
"মহা মুশকিল, আমার নাম আমি কি লিখবো, সেটা তো আমার ব্যাপার। আপনি বলে দিতে পারেন? দিন, আমার জিনিস আমায় দিন।"
দিল না পিওন। বলল, "আপনার শ্বশুরকে ডাকুন। তার হাতে দেব।"
রুমি বেশ খেপে গেল। "মজা পেয়েছেন না? বলছি আমার জিনিস। শ্বশুর মশায়কে ডাকতে হবে কেন?"
পিওন জানতে চাইল "এই বাড়িতে থাকেন বলছেন, তা হলে পদবি আলাদা কেন?"
তাকে বোঝাতে রুমি বলল
"বিয়ের পর থেকে আমি এখানে। এ বাড়ির আমি সদস্য। সেটা আমি প্রমাণ করে দিতে পারি।"
মানল না ভারতীয় পোস্ট অফিসের পিওন। বলল "আপনি এটা তো পাবেনই না। ভবিষ্যতেও এই নামে চিঠি এলে দিতে আসব না।"
মন খারাপ হয়ে গেল রুমির। গলায় একটা কান্না দলা পাকাতে লাগল। শ্বাশুড়ি বলেছিলেন "মামণি, মেয়েদের বিয়ের পরে স্বামীই সব। স্বামীর পদবীই লিখতে হয়।"
রুমি বলেছিল "গোটা বাংলাকে নড়িয়ে দিয়েছিল হুগলি। রাজা রামমোহন, শরৎচন্দ্র, এমন কি বিদ্যাসাগর পর্যন্ত। জানো মা, যখন বিদ্যাসাগর জন্মেছিলেন, তখন বীরসিংহ হুগলিতেই ছিল। আমি সেই হুগলির মেয়ে, হুগলির বউ। দেখো আমি পাল্টে দেব।"
এখন কি করে সেই শ্বাশুড়িকে ডাকে ? শ্বশুরের বাতের কষ্ট। তাঁকেই বা নামতে বলে কি করে! হাতে একটা কলম তুলে নিল মেয়ে। পোস্টমাস্টারকে একটা পত্র লিখতে বসল।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন