জাতিস্মর : পিনাকী চৌধুরী
এই ধরাধামে এমন কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটে যার কোনো কার্যকারণ খুঁজে পাওয়া যায় না ! বলা ভাল, বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা মেলেনা ! যেমন ধরুন , জাতিস্মর , পৃথিবীর অনেক দেশেই মূলত পাঁচ থেকে সাত বা আট বছরের শিশুরা নিজেদের জাতিস্মর হিসেবে ঘোষণা করে। হ্যাঁ, এইসব জাতিস্মরেরা কোনো এক অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে অবলীলায় তাদের পূর্বজন্মের কথা হুবহু তুলে আনতে সক্ষম । বাস্তবে এইসব শিশুরা এদের ব্যবহারে একরকম ভীতি প্রদর্শন করে, সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ওইসব শিশুদের, তাদের পূর্বজন্মের কথাতেও ভীতির কারণ খুঁজে পাওয়া যায় ! তবে সাধারণত সাত বা আট বছর বয়স পর্যন্ত জাতিস্মরেরা পূর্ব জন্মের কথা মনে রাখতে পারে।
যুক্তিবাদীরা হয়তো পুরোটাই গিমিক বা ভ্রান্ত ধারণা বলে দাবি করে দায় এড়াবেন , কিন্তু ক্যারল ব্যোমেনের বইয়ে এইসব জাতিস্মর দের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে। কিভাবে একজন জাতিস্মর তার পুর্ব জন্মের কথা এই জন্মেও বলতে সক্ষম, তার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় । তবে এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো যে, জাতিস্মর এর অস্তিত্ব মানতে হলে, অবশ্যই পূর্ব জন্মের অস্তিত্ব মানতে হবে । জাতিস্মরদের নিয়ে গবেষণার অন্যতম উল্লেখযোগ্য নাম ইয়ান স্টেভেনসন । গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে তিনি তাঁর গবেষণা শুরু করেছিলেন এবং রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন । অনেকেই তাঁর সেই লেখার মধ্যেও বৈজ্ঞানিক সত্য খুঁজে পেয়েছিলেন। তবে জাতিস্মরদের কিছু কিছু লক্ষণ বা সুনির্দিষ্ট কোনো জন্মগত শারীরিক দাগ থেকে নাকি জানা সম্ভব হয় সেই ব্যক্তির পূর্ব জন্মের কথা ! যেমন ধরুন, টকটকে লাল বা রক্তবর্ণ জন্মদাগ থেকে নাকি বোঝা যায় যে, এই বিশেষ দাগের অধিকারীর পূর্ব জন্ম কিন্তু খুব দূরবর্তী নয় । তবে এই বিশেষ দাগ পূর্ব জন্মের পুড়ে যাওয়া দাগও হতে পারে ! আর যদি সেই লাল দাগ হালকা হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে, সেই ব্যক্তির পূর্ব জন্মের দহন কার্যের নিরাময় হয়েছিল !
পরিশেষে বলি, পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ২০১৪ সালে জাতিস্মর দের নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন, যাতে দেখা যায়, একজন মানুষ কিভাবে তাঁর পুর্ব জন্মের কথা এই জন্মেও অবলীলায় বলে দিতে পারেন ! অকল্পনীয়, অবিশ্বাস্য, যাই বলুন না কেন, জাতিস্মর দের অস্তিত্ব আজও রয়েছে এই পৃথিবীতে !
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন