ভালো লেখার পদ্ধতি-ঋদেনদিক মিত্রো


ভালো লেখার পদ্ধতি-ঋদেনদিক মিত্রো
ভালো লেখার পদ্ধতি 

ঋদেনদিক মিত্রো  

লিখতে চাও কি ভালো?  
শব্দে-শব্দে ছড়াও আলো --- 
     পাঠকেরই চক্ষু যেন কাড়ে,  
ভোরের বেলায় রোদের খেলায়  
গাছের পাতায় মুক্ত হাওয়ায় 
     পাখপাখালি যেমন আড্ডা মারে ! 
ভাবনা এবং শব্দ প্রয়োগ --- 
তেমনি হবে যোগ ও বিয়োগ,   
     অংক যেমন করো তুমি  
     এটাও অংক ধরো তুমি,  
সাহিত্যকে আবেগ ব'লে যারা প্রচার করে,  
সাহিত্য কী -- তা না বুঝেও খাতা কলম ধ'রে  
     বোকা খেতাব খ্যাতি নিয়ে  
     চুলপাকিয়ে মরে! 

সাহিত্যটা  সঠিক ক'রে  
বোঝে কজন অংক ধ'রে,  
মুখস্ততে ডিগ্রী গ'ড়ে  
চাকরি ক'রে গাড়ি চড়ে, 
বড়-বড় পদটা নিয়ে  নিচ্ছে আত্মতৃপ্তি,  
তাদের কারোর আছে আবার 
     ডক্টরেটের  তকমা সহ  
             অধ্যাপনার বৃত্তি ! 

কেউ বা আবার চটি ছিঁড়ে,  
লেখার পথে চাইছে হীরে,  
আসলে অনেক না বুঝলে না জানলে  
        অপরিণত বুদ্ধি এবং অনুভূতির  
             দ্বারা যে-কাজ করে,  
সে-কাজে তো পূর্নতা নেই,  
                কর্মের প্রান্তরে !  
নিজেই জানে না কোনটা কেন  
       ভুল আর ঠিক সূক্ষ্ম হিসেব ধ'রে !  

শব্দ দিয়ে দিবস আসে,  
     শব্দ দিয়ে রাত্রি,  
শব্দ দিয়েই নৈঃশব্দ  
      হয় অজানার যাত্রী!   

শব্দগুলো কোথায় কেমন  
       সাজালে কী ঘটে,  
এই ছবিটা বুঝতে শেখো  
       তোমার মানস-পটে ! 

আগের কালের লেখকদিগের  
     পড়ো জীবনযুদ্ধ,  
পড়ো, ভাবো,  তাঁদের লেখা,   
     কোনটা কেন শুদ্ধ,  

নিজের কালের লেখক দিগের 
     লেখাও পড়া চাই,  
চেষ্টা করো নিজের মতন 
     নিজের লেখাটাই ! 

সাহিত্যটা শুধু প'ড়ে  
     হয়না সাহিত্য,  
বিজ্ঞান, ইতিহাস ও ভূগোল  
     পড়ার দায়িত্ব !  

মুক্ত জ্ঞানে উড়বে যখন,  
     তখন লেখক হবে,  
ধুলার কণা আসবে যখন  
     তোমার অনুভবে !
     
কবিতা হোক এমন জিনিস --- 
     রাতের আকাশ-তারা,  
শব্দে এমন থাকবে খেলা --
     করবে দিশাহারা !   

কখনোবা অমাবস্যার  
     মতো কবিতা হয়, 
রহস্যময় গা ছমছম 
     ভয় নিয়ে বিস্ময় !  
     
কোনো কবিতাটা আবার  
     হবে ভোরের সূর্য,  
জানলা দিয়ে ঢুকে করে  
     ঘুমের পলক মুহ্য ! 

গদ্য হবে এমন জিনিস,  
     এমন সুদূরি  পথ,  
পাঠক হয়ে যাবে যেন  
     প্রাচীন পরিব্রাজক !   

লেখো কাটো, কাটো লেখো,  
     শব্দের তছনছ,  
 তবেই তোমার লেখা হবে  
     বিস্কুট মচমচ !   

কোন শব্দ ,  কোন বাক্য,  
    কেমন করে এলে,  
কোন ভঙ্গী কেমন ক'রে   
    কোন অংশে খ্যালে --- 

এসব নিয়ে নিজের মত  
     ভাবো এবং দেখো,  
কথাগুলো নিখুঁত ক'রে   
    যেন খেয়াল রেখো ! 

দাদা-দিদির বাক্সপ্যাটরা  
     এসব কিছু ব'য়ে  
কবি-লেখক হওয়া গেলে  
     গায়ের গতর ক্ষয়ে,  
এই পৃথিবীর সব কুলিরা  
     করবে এবার দাবী,  
তাদের পথেই লুকিয়ে আছে 
     কবি হবার চাবি !  

তা বলে নয় ঔদ্ধত্য -- 
    কোনো গুণীর প্রতি,  
গুণীর দুঃখে দুখী হলে  
     বাড়ে প্রাণের জ্যোতি ! 

যে যেমনি কাজ টা করুক,  
     চেষ্টা যারা করে, 
তাদের যদি সম্মান দাও --  
     তৃপ্তিতে মন ভরে !
    
পড়ো,  লেখো,  ভাবো,  জাগো ,  
     দেখো দিগন্ত,  
দেখো নিশার গভীরতায়  
     রাত্রি অনন্ত,  
দেখো তারার আকাশেতে  
     বিস্ময়েরই খেলা,  
নিজের মত নিজে থাকো  
     সময় সারা বেলা,  
জ্ঞান বুদ্ধির চর্চাবিহীন  
    সঙ্গ গুলি ছাড়ো,  
বড় হবে,  ছোট থাকার  
     পথগুলিকে মারো,  
ঘরের লোক,  বাইরের লোক,  
    এ সব ফারাক ভ্রান্ত,  
জ্ঞানের সঙ্গে দূরত্ব যার  
    সে করে অশান্ত,  
আবার দেখো কোনো জ্ঞানী  
    কুটকাচালি খ্যালে,  
তার সঙ্গও বিপদজনক  
    বিপদে দেয় ঠেলে,  
আসল কথা কেমন ক'রে  
   নেবে সফলতা,  
সেটা হলো তোমার হিসেব,  
   গভীর গোপন কথা,  
অবশ্যই তো হতে হবে 
     সৎ সাহসী বেশ ,  
সেই সঙ্গে আরো অনেক 
     গুণের গভীর রেশ !  
সকল জীবে মনটা দিও,  
     তাদের করো যত্ন,  
পিঁপড়ে থেকেও  পাবে গভীর  
     অনুসুখের রত্ন !  

ঘাসের শিকড়, তাতেও আছে  
    অনেক রকম বোধ, 
এই সবকে করতে হবে  
    গভীর অনুভব,   

গৃহস্থ লোকের মত  
     বোকা চালাকিটা  
না ছাড়লে -- আসবে না তো  
     কোনো ভালো লিখা !   

চালবাজ সব গুরুজনের  
    স্বভাবগুলো ছাড়বে,  
তবেই তুমি সঠিক করে  
    মহৎ কর্ম পারবে !
 ,  
এসব কঠিন সিদ্ধান্ত  
     মানবে যারা ঠিক,  
তারাই হবে বড় কিছু -- 
     হোক যে-কোনো দিক !  
ভুল সঙ্গ ভুল পরিবেশ 
     ভুলেই রাখে ঢুকিয়ে,  
এই বোধ যার কাজ করে না -- 
     সব কিছু যায় শুকিয়ে ! 

সকলে তাই হয়না বড়,  
     কর্ম সবাই করে,  
জীবনধারায় পৃথক আদল  
     পৃথক করেই গড়ে ! 

তোমার এখন বয়েস কত,  
     পেকে গেছে চুল,  
তার জন্য কী হয়েছে -- 
    বুঝলে যখন ভুল --- 
হঠাৎ করে বদলে নিও   
    চলার গতি-পথ,  
ঠিক ভাবনা তৈরী করে  
    বীরত্ব হিম্মৎ,   
অমনি তখন হয়ে গেলে 
    অশ্বারোহী যোদ্ধা,  
করবে এবার না-পাওয়াকে  
    নিজের মতন কব্জা,  
তোমার বয়স হোক না যতই,  
    যখন যোদ্ধা হ'লে -- 
হয়ে গেলে তরুণ তাজা, 
    নিজের শক্তিবল-এ !

মানব জীবন --- বয়স কিসে ! 
    স্বপ্ন আছে তার,  
বদলে গেলে করতে পারে  
    জগৎ অধিকার !



Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.