চলচ্চিত্র এবং অস্কারের কাহিনি : পিনাকী চৌধুরী

চলচ্চিত্র এবং অস্কারের কাহিনি : পিনাকী চৌধুরী   
চলচ্চিত্র এবং অস্কারের কাহিনি : পিনাকী চৌধুরী   

 চলচ্চিত্র মানেই গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড! আর চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ পুরস্কারের নামই হল অস্কার। সারা বিশ্বজুড়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে যাঁরা চলচ্চিত্রজগতের সাথে যুক্ত, তাঁদের প্রত্যেকেরই মনের কোণে লুকিয়ে থাকে এই পুরস্কার লাভের সুপ্ত বাসনা! কিন্তু কি সেই কাহিনি? ১৯২৭ সালে আমেরিকার ৩৬ জন সিনেমাপ্রেমী মানুষ একটি সংগঠন গড়ে তুললেন এবং তার নামকরণ করলেন The academy of Motion Picture , Arts and Science। এটি সংস্থাটির কাজ ছিলো মূলতো সিনেমার পুঙ্খানুপুঙ্খ সমালোচনা করে সিনেমার সার্বিক উন্নতিসাধন।
চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের উৎসাহ বাড়াতে পুরস্কারেরও ব্যবস্থা করা হল। সার্বিকভাবে একাডেমিটি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হল যে, একাডেমির অর্জিত অর্থের একটা বড় অংশ ব্যয় করা হবে ভালো সিনেমার উন্নতিসাধনে। ১৯২৯ সালেই প্রথম সিনেমার জন্য পুরস্কার ঘোষনা করা হয়। ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে, আজ যখন অস্কার পুরস্কার ঘোষণার সময় সারা বিশ্ব থেকে অসংখ্য মানুষ সেখানে সমবেত হন, তখন সেই প্রথমবারের ঘটনার সাক্ষী ছিলেন মাত্র ২৭০ জন! সোনার তলোয়ার হাতে অস্কারের বহুমূল্য মূর্তিটি লম্বায় ১৩.৫ ইঞ্চি।
কিন্তু এই পুরস্কারের নামটি কিভাবে অস্কার হল ? একটি সুন্দর গল্প প্রচলিত আছে, অতীতের সেইসব দিনে একাডেমির এক লাইব্রেরিয়ান হঠাৎ একদিন সেই তলোয়ার হাতে মূর্তিটিকে দেখেই বলে উঠলেন যে, তাঁর কাকা অস্কারও নাকি অনেকটাই সেইরকম দেখতে ! সেইথেকেই এই নামকরন।   ব্রোঞ্জের তৈরি এই মূর্তিটিকে সোনার রঙের প্রলেপ দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছিলো এবং এটির ওজন ৮.৫ পাউন্ড , শিল্পসুষমামন্ডিত এই স্মারকটি যেন আজও সারা বিশ্বের বিস্ময়! আজও তাই অস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সারা বিশ্বের চোখ থাকে সেই নক্ষত্রখচিত, জমকালো অনুষ্ঠানে।
আমাদের দেশে যেমন নোবেল চুরি হয়েছিলো, সেইরকমই দু'হাজার সালে শিকাগো থেকে লস এঞ্জেলস যাবার পথে এই অস্কার পুরস্কারও চুরি হয়েছিলো ! তখন সময়টা বড়ই অশান্ত ! বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে গেছে , চারিদিকেই তখন ত্রাহি ত্রাহি রব , কাতারে কাতারে মানুষ মরছে ! অবধারিতভাবে এর প্রভাব এসে পড়লো এই পুরস্কারের ওপর। বলাবাহুল্য , সেইবছর অভিনেতা - অভিনেত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্লাস্টার অব প্যারিসের তৈরি সোনালী রঙে রাঙানো মূর্তি ! আমাদের দেশের বরেন্য সেই মানুষটি , সত্যজিৎ রায়কে সারাজীবনের সৃষ্টিশীল কাজকর্মের জন্য এই অস্কার পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিলো ! আজও যেন চলচ্চিত্র জগতের কাছে এই বিশেষ সম্মান অস্কার হল বিশ্বের বিস্ময় !
Share on Google Plus

About Shraboni Parbat

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.