![]() |
শিক্ষক ... দুই প্রজন্ম : সোনালী মুখার্জী |
. . . . . . . . . . . . . . . . .
স্যার ...স্যা . . র . . হঠাৎ বাস থেকে নামতেই কেউ যেন পিছন থেকে ডেকে উঠলো ..পিছন ফিরে মহিমবাবু দেখলেন কোট টাই পরা বছর ত্রিশের একটি ছেলে তার দিকে হাসি মুখে এগিয়ে আসছে একটা বড়ো গাড়ি থেকে নেমে ..ছেলেটি এগিয়ে এসে মহিমবাবুর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল..বললো.. আমায় চিনতে পারলেন না স্যার ??আমি বিকাশ ..ক্লাসে খুব মিথ্যে কথা বলতাম বলে আপনি একদিন আমায় সারাদিন মিথ্যে বলতে বলেছিলেন ??বলেছিলেন ,একটাও যদি সত্যি বলে ফেলি তবে সারাজীবন আর মিথ্যে বলা যাবে না ?পারিনি স্যার ..সেদিন সারাদিন মিথ্যে আমি বলতে পারি নি ..আপনি আমায় আমূল বদলে দিয়েছিলেন .সেদিন আপনারা ছিলেন বলেই আজ আমি এখানে স্যার ..মহিমবাবুর মুখটা অনাবিল আনন্দে ভরে উঠলো ..তার শিক্ষা আজ সার্থক ....ll
আর এক মহিমবাবু বাস থেকে নামলেন ..সারাজীবন শিক্ষার আদর্শে পথচলা মহিমবাবু দেখলেন কলেজপড়ুয়া চারপাঁচ জন.. ছেলে মেয়ে একসাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে আর অশালীন ভাষায় কথা বলে যাচ্ছে ..মহিমবাবু থমকে দাঁড়ালেন ..পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলেন ..তিনি তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলে উঠলেন ..ছি :ছি :তোমরা কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়ে ..এসব কি করছো ??কিন্তু এতে তারা একটুও বিচলিত না হয়ে ওদের মধ্যে থেকে একটি মেয়ে বলে উঠলো বুড়োটা বড্ডো জ্ঞান দিচ্ছে রে ..আর একটা ছেলে একমুখ ধোঁয়া ছেড়ে বলে উঠলো দাদু ..বেশি ঘ্যানঘ্যান করবেন না তো ??যেখানে যাচ্ছেন যান ..সবাই হ্যা হ্যা করে হেসে উঠলো ..ভারাক্রান্ত মন নিয়ে মহিমবাবু বাড়ির পথ ধরলেন ll
আর এক মহিমবাবু ক্লাস ফোরের সুচরিতা কে প্রতিদিন ছুটির পর ক্লাসরুমে আটকে রাখতেন ..তার সাথে প্রতিদিন নিজের বিকৃত মনের পাশবিক চাহিদা পূরণ করতেন ..একদিন স্কুলেরই আর একটি মেয়ে দেখতে পেয়ে বাড়িতে মাকে সব কথা বললে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছিল ..মহিমবাবুকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ..ll
তাই যুগে যুগে মহিমবাবুরা থাকবে শিক্ষক হয়ে ..কিন্তু সেই আদর্শ ভাবনা মনোবিকতাগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে ..না শিক্ষকের মধ্যে ..না ছেলেমেয়ের মধ্যে ..কারোর ই আজ কোনো দায় নেই ..সমাজের প্ৰতি ..সত্যি যদি সব পাল্টে আবার নতুন করে শুরু করা যেত ???
যদি যেত ????
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন