![]() |
দৃষ্টিপথে : বিদিশা সরকার |
হাইওয়ে ধরে ছুটছিল গঙ্গাফড়িঙের মতো কালো একটা দ্রুতগামী অন্ধকার। পথের সমান্তরাল বিপথ ও । হেমন্তের ওপেক আলোয় মুখোমুখি ফোকাস জরিপ । কোনটা মৃত্যু কোনটা আরও অনিশ্চিত, সওয়ারি জানেনি । সেই থেকে মনিবের মানে তো রিমোটই । উপহার তুলে রাখি নাগালের দুরত্ব বাঁচিয়ে । সেই প্রথম জেনেছিলাম মৃত্যুরও সমবেদনা থাকে। হাত বাড়িয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়, হাইওয়ে থামিয়ে দেয় বানিয়া প্রগতি । ঝোপরপট্টির প্রিয়বুক, শান্ত করে ভিতু অপমান ।
এমারজেন্সির সিঁড়ি বেয়ে আমারই রক্তের পথ নজরে পড়েনি কারো , একজনও না। তুমিও জাননি সেইসব। ব্যক্তিগত কান্নাগুলো দলামচা করে কখন যে কোন আঘাটায় ! শুধু মাঝে মাঝে ডাক্তার ভগবান হয়ে দেখা দেয় । সেও কম কি !
এইভাবে চলে গেল বেশ কয়েকটা বছর । একই শহরে বসবাস । টার্মিনাস আলাদা আলাদা । গল্পের ভূমিকা ছেড়ে বিষয়ান্তরে যেতে গিয়ে দশটা নম্বরে আটকে যাই । অহমিকা আমাকেও থামিয়ে দিয়েছে বারবার। এটাকে বিচ্ছেদ বলতে পারো না । অতৃপ্তির মাশুল গুনে গুনে নৈসর্গিক ভাষা বদলে যায় । সকাল সকালই শুধু ,পরিসর ছোটো হতে হতে দেয়াল জীবন ! অজ্ঞাতবাসের আয়ু প্রতি জন্মদিনে ক্রমশ মন্থর হয় যাবজ্জীবনে । আমাদের ছোটো সুখ হঠাৎ জোয়ার এলে স্বপ্নেই ভেঙে যায় বালির পাহাড় !
যতবার হোঁচট খেয়েছ , ততবার আমিও । যতবার মাঝরাতে বারান্দায় , ততবার খাট ছেড়ে আমিও জানলায়। কি কারণে এইসব! তুমিও তো চুকিয়ে দিয়েছিলে। যেভাবে অটোর ভাড়া , বিহানের শেষ তরীটিকে--- হয়তো আমার ভুল ছিল। হঠাৎ আকাশী থেকে অরণ্য আড়ালে। ছত্রাকের মতো অধিগ্রহনের উদ্বাস্তু নিয়ম । সে সময়ে চাঁদও থাকেনা । আমরাও যে একেকটা উপগ্রহ'র মতই ! আলো ধার করে উদ্ধার করেছি কিছু তাৎক্ষণিক বিশল্যকরণী । প্রানসঞ্চার হলে অনিবার্য গন্তব্যসুলভ । ক্রেডিট কার্ডেই ঘরে তুলে আনি মহাজাগতিক নিরুত্তাপ জাভেরি ব্রাদার্স !
ফিরে আসাটা অথবা ছেড়ে আসা ,তার মাঝখানে এক শীর্ণ বহমানতা লাল সিগন্যালে দাঁড়িয়েছিল যখন,সেই রাস্তাটার নাম কি সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। এই শহরটা এমনিই। সঠিক আলোর খোঁজেই তো পথে নামা। অথচ বাহকের হাতে মরণ বন্ধক রেখে সাড়ে সাত মাইল আকাশই দেখলাম একনাগারে। তার আগে দাঁড়িয়েছিলাম ঝর্ণার রেলিং ঘেঁষে। সবুজ থেকে আরও সবুজতর হয়ে দেখেছি বাতাসের সঙ্গে বাতাস কথা বলছে, " প্রফুল্ল,চিনতে পেরেছ ?"
এই তির্যকটার প্রয়োজন ছিল। একটা পোর্সেলিনের ফুলদানি কেঁপে উঠেছিল কারণ হাওয়া বদলের সংশয় থেকে সেও মুক্ত নয়। ধরা পড়া'র পরের অধ্যায়ে কোনও অজুহাতই ধোপে টেকেনি। চাঁদ একটা আরামকেদারের মতই আধখানা হয়ে ঝুলছে। মাঝে মাঝে একটু কাত করে ঢেলে দিচ্ছিল ম্যাগমা। নক্ষত্রবেষ্টনী ছেড়ে কতটুকুই বা এগোনো যায় ! বা পৌঁছানো। মাইনাস ডিগ্রিতে একটা সম্পর্ক মরুদ্যানের গল্প বলছে। শুনতে পাচ্ছি , কিন্তু দেখতে পাচ্ছি কম।
সম্পর্ক আর দূরত্বের অনুমান নির্ভুল বলি কী করে। মাইনাস পাওয়ারের চশমাটা মাঝে মাঝে ইচ্ছাকৃত ফেলে রেখে পথে নামি। অন্ধকার হাত ধরে সাঁকো পার করে দেয়।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন